২১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ১১:২৭
দখল-দুষণে শ্রীনগরে নদ-নদীগুলো এখন পরিণত হয়েছে মরা খালে!
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৩ মার্চ, ২০২০, শ্রীনগর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে পদ্মার চরের মাটি। কাউকে পাত্তা না দিয়ে মাটি লুটেরা চক্রটি অনেক দিন ধরে প্রকাশ্যে এই কাজ করে যাচ্ছে।

তাদের দাবী, যেখানে শ্রীনগর উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমুতি নিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে, সেখানে কে বাঁধা দিবে?

তবে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার জানান, খাল বা চরের মাটি কাটার অনুমতি দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। যারা মাটি কাটছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকূল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় চরের মাটির হরিলুট হলেও তারা অজ্ঞাত কারণে নিশ্চুপ।

একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমানকে একাধিক বার বিষয়টি জানিয়েছেন। হাবিবুর রহমান কোন ব্যবস্থাতো নেয়ইনি উপরন্ত মাটি লুটেরাদের কাছে তার পরিচয় প্রকাশ করে দিয়েছে। এতে লুটেরারা তাকে নানা ভাবে নাজেহাল করে যচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, ওই এলাকার একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ভাগ্যকুল ইউনিয়নের দক্ষিন কামারগাঁও ধোপার বাড়ি সংলগ্ন পদ্মা নদীর তীর ঘেষা চরের মাটি হরিলুট করছে। ওই চরের বিভিন্ন স্থান থেকে ফসলি জমির মাটি অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে কেটে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে আসছে। প্রতিদিন ওই স্থান থেকে ছোট বড় দেড় থেকে দুইশ ট্রলি মাটি কাটা হচ্ছে।

উপজেলার কামারগাঁও এলাকার হারুন খানের ছেলে মোঃ দিপু খান ও তার ছোট ভাই রকি খান সহ বেশ কয়েক জনের একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটটি চরের বিভিন্ন পয়েন্ট চিহ্নিত করে তা নিজেদের পত্রিক সম্পত্তি দাবী করে মাটি লুট করে আসেছে।

সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাটি কেটে কোন কোন স্থানে প্রায় ১৫-২০ ফুট গভীর একাধিক পুকুর কাটা হয়েছে। নতুন করে চলছে অনুরুপ খনন।

এ বিষয়ে দিপু খান বলেন, উপজেলা পরিষদের ইউএনও অফিস থেকে মাটি কাটার অনুমতি এনে মাটি কাটা হচ্ছে। সুতরাং এখানে কে আসবে বাধা দিতে। তাছাড়া চরে তার নিজের জমি রয়েছে। সেই জমির খাজনা সব পরিশোধ করা রয়েছে।

কয়েকজন শ্রমিকের সাথে আলাপ করে ও এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, দৈনিক এক একটি ট্রলি ৮-১০ টি ট্রিপ দেয়। এরকম অন্তত ৩০ টি ট্রলি রয়েছে। প্রতিটি ছোট ট্রলির মাটি বিক্রি হয় ৫শ টাকা করে। আর বড় ট্রলির দাম ৭শ থেকে ১ হাজার টাকা। দুরত্ব ভেদে এর দাম কম-বেশী হয়। এই মাটি বিক্রির জন্য আলাদাভাবে রয়েছে দালাল চক্র।

স্থানীয় ভূমি অফিস, চরের মালিকানা দাবিদার, ট্রলির মালিক ও শ্রমিকরা মিলে তৈরি সিন্ডিকেটটি মাটি লুটের সাথে জাড়িত। তারা একে অপরের সহযোগিতায় চরের মাটি হরিলুট করে বিক্রি করে দিচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দিপু ও তার ছোট ভাই।

স্থানীয়রা দাবী করেন, এখনই মাটি লুটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আগামী বর্ষা মৌসুমে এই এলাকায় পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিবে।

error: দুঃখিত!