১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ১০:৫০
টংগিবাড়ীতে পদ্মার রুদ্র মূর্তি, ৫ কিলোমিটার জুড়ে ভাঙ্গন শুরু
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১০ জুন, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

বর্ষার শুরুতেই উজান হতে নেমে আশা ঢলের পানিতে মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার পদ্মা নদী রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। তীব্র স্রোত বইছে পদ্মায়। এতে উপজেলার দিঘিরপাড়, পাচঁগাও কামাড়খাড়া ও হাসাইল ইউনিয়নের বেশ কিছু অঞ্চলে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদী দিয়ে তীব্র স্রোত বইছে। আর এতে উপজেলার হাইয়ার পাড়, বড়াইল, মূলচর, পাচগাও, হাসাইল গ্রাম এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

শত কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত পদ্মা নদী তীর সংরক্ষন বাঁধের পাচঁগাও এলাকায় বাধ ধসে যাওয়া স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পুরো বাধটি।

এছাড়া উপজেলার দীঘিরপাড় ইউনিয়নের হাইয়ারপাড় গ্রামের হাইয়ারপাড় আল-মদিনা জামে মসজিদটি নদীর দিকে একেবারে হেলে পরেছে। মসজিদটির ফ্লোরের নিচের কিছু অংশ ইতিমধ্যে নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। যে কোন মুহুর্তে পুরো মসজিদটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। মাত্র ৪ বছর আগে তৈরী করা মসজিদটির আধুনিক ভবনটির পেছনের অংশের মাটি পদ্মায় বিলিন হয়ে মসজিদটি অনেকটা নদীর দিকে হেলে পরেছে।

এছাড়া মূলচর গ্রামের মোস্তফা খা, ইব্রাহিম খার দিঘিরপাড় বাজারের স’মিলের সামনে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তারা ওইস্থানে বাঁশ পুতে আবর্জনা ফেলে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করছে।

দিঘিরপাড়ের মূলচর হতে পাচঁগাও পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কোথাও প্রবল কোথাও মৃদূ আকারে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

বিগত কয়েক বছরের ভাঙ্গনে টংগিবাড়ী উপজেলার দক্ষিন অংশের হাসাইল ও দিঘিরপাড় ২ টি ইউনিয়নের প্রায় পুরো অংশ এবং কামাড়খাড়া, পাচগাও ইউনিয়নের অর্ধেক অংশ পদ্মায় বিলিন হয়ে যাওয়ায় ওই অঞ্চলের মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তারা ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাশাপাশি ব্যাক্তি উদ্যেগে বড় গাছ নদীতে পুতে ব্যাগ ভর্তি বালু ব্যাগ কিছু স্থানে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে।

এ ব্যাপারে দিঘিরপাড় মূলচর গ্রামের বাসিন্দা মিজান খান জানান, এ বছর বর্ষার শুরুতেই নদীতে প্রচন্ড স্রোত বইছে। আর স্রোতের কারনে বেশ কিছু অঞ্চলে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন রোধে সরকারের পাশাপাশি এলাকার ধন্যাঢ্য ব্যাক্তিদের সহয়তায় হাইয়ারপাড় হতে মূলচর পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার বালু ভর্তি ব্যাগ ফেলে বাধ নির্মাণের কাজ চলছে।

ওই এলাকার অপর বাসিন্দা হিমেল খান জানান, বাধ নির্মাণ শুরু হওয়ায় এই এলাকার মানুষের মনে আনন্দের বন্যা বইছে। তবে এ এলাকাকে রক্ষার জন্য স্থায়ী বাধ নির্মাণ করা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে দিঘিরপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম হালদার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ১০০ মিটার একটি বাধ নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আরো কিছু বাধ উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক সহায়তায় এলাকাবাসী ব্যাক্তি উদ্যেগে স্থানে স্থানে বাধ নির্মাণ করে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছে।

এ ব্যাপারে টংগিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা আক্তার জানান, আমি ভাঙ্গনকবলিত স্থানগুলি পরিদর্শন করে দেখেছি প্রচুর ভাঙ্গতেছে। আমি ভাঙ্গনরোধে ব্যাবস্থা নিতে ডিসি অফিসে রিপোর্ট পাঠিয়েছি। শুনলাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ শত মিটার জিএ ব্যাগ ফেলবে।

error: দুঃখিত!