১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মঙ্গলবার | সন্ধ্যা ৭:৫৫
জেসি হত্যায় অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৫ জানুয়ারি, ২০২৩, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ সদরের এভিজেএম স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসি মাহমুদ মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত বিজয় রহমান ও আদিবা আক্তারের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেসির সহপাঠী ও স্বজনরা।

আজ বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টা’র দিকে শহরের আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভ. গার্লস হাই স্কুল (এভিজেএম) এর সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে বের হয় নিহতের সহপাঠী ও স্বজনরা। পরে সেটি মুন্সিগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এসে মিলিত হয়। সেখানে মানববন্ধনে অভিযুক্তদের ফাঁসি দাবি করেন তারা।

এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় প্রেমের বিরোধ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্কুলছাত্রী জেসি খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়। মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় নিহতের বড় ভাই শাহরিয়ার জিদান বাদী হয়ে বিজয় ও আদিবাকে আসামি ও অজ্ঞাতনামা আরও ১-২ জন উল্লেখ করে জেসির মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে পুলিশ আদিবাকে গতকাল দুপুরে গ্রেপ্তার করলেও বিজয় এখনো পলাতক রয়েছে।

বিজয় রহমান (২২) মুন্সিগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আরিফুর রহমানের ছেলে ও আদিবা আক্তার (১৯) পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাহিদ হাসানের মেয়ে।

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুমন দেব জানান, আদিবা ও জেসি উভয়ের সাথেই প্রেমের সম্পর্ক ছিলো অভিযুক্ত বিজয়ের। সম্প্রতি বিজয় আদিবাকে বিয়ের পরিকল্পনা করছিলো বলে জানতে পারে জেসি। এরপর জেসি রাগান্বিত হয়ে উঠে। বিজয়ের অপর প্রেমিকা আদিবাকে জেসি ও বিজয়ের মধ্যকার বেশকিছু একান্ত আলাপচারিতার ম্যাসেঞ্জার কথোপকথনের স্কিনশট পাঠায়। সেটি দেখে আদিবা বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

পরে গতকাল তারা সিদ্ধান্ত নেয় বিজয়ের বাসায় এ নিয়ে ফয়সালা করার। পরে তারা ৩ জন গতকাল সন্ধ্যায় একসাথে বিজয়ের বাসার ৫ম তলার ছাদে সন্ধ্যার দিকে মিলিত হয়। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আদিবা ও বিজয় উভয়ই জেসিকে শরীরের বিভিন্ন অংশে কিল-ঘুষি মেরে জখম করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বিজয় জেসির গলা চেপে ধরলে ঘটনাস্থলেই মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়ে৷ পরে বিজয় স্থানীয় আরও কয়েকজনের সহায়তায় জেসিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এবং পরিকল্পিতভাবে ডাক্তারকে জানায় সে ছাদ থেকে পড়ে গেছে। এরমধ্যেই জেসি মারা যায়।

পুলিশ মধ্য কোর্টগাও এলাকায় বিজয়ের বাসার আশপাশ থেকে জেসির ব্যবহৃত পায়ের স্যান্ডেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা’র দিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মধ্য কোর্টগাও এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী সেলিম মাহমুদের মেয়ে আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভ. গার্লস হাই স্কুলের এসএসসি বর্ষের শিক্ষার্থী জেসি মাহমুদ (১৭) কে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা।

তবে এসময় মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক জানান, সন্ধ্যা ৬টা’র দিকে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার ভাই পরিচয় দেয়া আরেক যুবক। এসময় মেয়েটি অচেতন অবস্থায় ছিলো। পরে তার অবস্থার অবনতি দেখা দিলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

বুধবার মৃত জেসির মরদেহ মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে সন্ধ্যার পর তার জানাজা ও দাফন শেষ হয়। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন যুবলীগ নেতা জাহিদ হাসানের কন্যা আদিবা আক্তার।

error: দুঃখিত!