৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সন্ধ্যা ৭:১৬
কেউ রাজি না হওয়ায় মিরকাদিমে অদলীয় ব্যাক্তিকে বিএনপি’র দলীয় মনোনয়ন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নিজ দলের কেউ প্রার্থী হতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত শামসুর রহমান নামক একজনকে দলীয় প্রার্থী করেছে বিএনপি। কয়েক দফা বৈঠক করেও সেখানে বিএনপির কোনো নেতাকে নির্বাচন করতে রাজি করাতে পারেনি বিএনপি।

বিএনপির মেয়রপ্রার্থী শামসুর রহমান বলেন, তিনি কখনো বিএনপির রাজনীতি করেননি। কোনো দলের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাও ছিল না। এবার নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল তাঁর। শেষ মুহূর্তে বিএনপি নেতারা অনুরোধ করায় তিনি ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান পৌর মেয়র শহিদুল ইসলামের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে তাঁর বিরোধ রয়েছে। এ জন্য তিনি শহিদুলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। বিএনপি এই সুযোগকে কাজে লাগাতে তাঁকে মনোনয়ন দেয়।
স্থানীয় বিএনপির নেতারা বলেন, কাউকে নির্বাচন করতে রাজি করাতে না পারায় শামসুর রহমানকে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর বলেন, ‘এখানে আমরা প্রার্থী সংকটে ছিলাম—এ কথা সত্য। তবে শামসুর রহমানও মীরকাদিম পৌর বিএনপির সদস্য।’
অবশ্য পৌর বিএনপির কমিটিতে শামসুর রহমান নেই। প্রাথমিক সদস্য পদও নেই তাঁর। শামসুর রহমান নিজেই বলেছেন, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে কখনো ছিলেন না তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার পৌর নির্বাচনে জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান, তাঁর ভাই মীরকাদিম পৌর বিএনপির সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান এবং পৌর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক নেতা আখতার ফারুকের মধ্য থেকে একজনের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত এঁদের কেউ নির্বাচন করতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, সেখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন মনসুর আহমেদ কামাল। বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ও মিজানুর রহমান—এই দুজনের ভগ্নিপতি তিনি। এ জন্য তাঁরা নির্বাচন করতে চাননি। জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই জসিম উদ্দিন সম্পর্কে তাঁর ভায়রা। এতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে জেতাতে তাঁরা ভালো প্রার্থী না দিয়ে শামসুর রহমানকে প্রার্থী করেছেন। অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থী এমনিতেই সরে দাঁড়িয়েছেন। কেননা দলের মূল নেতারা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীকে সমর্থন করলে তাঁদের জয়ের সম্ভাবনা থাকবে না।
অবশ্য জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী আত্মীয়তার সম্পর্কের জসিম ও মিজানের কারণে প্রার্থী না হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তাঁদের প্রার্থী সংকটের কারণে শামসুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এই পৌরসভায় জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘এখানে বিএনপির প্রার্থী দেখে সবাই বুঝে গেছেন, কোন প্রার্থী নেই বলেই বিএনপি তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছেন।’

error: দুঃখিত!