১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | দুপুর ২:১৯
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
ইউনূস হিলারীর সাথে মিলে পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন- তোফায়েল আহমেদ
খবরটি শেয়ার করুন:

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে যোগসাজশ করে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের ষড়যন্ত্র করেছিলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তোফায়েল বলেন, পদ্মা সেতুর মতো এই বিশাল প্রকল্পে যাতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন না করে, হিলারির সঙ্গে মিলে সেই ষড়যন্ত্র করেছিলেন ড. ইউনূস। তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন একশ্রেণির বুদ্ধিজীবী। অর্থনৈতিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করার দায়ে ইউনূসসহ যাঁরা এই ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বাণিজ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, কানাডার আদালত রায় দিয়েছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হয়নি। তাহলে ইউনূসসহ যাঁরা ওই ইস্যুকে পুঁজি করে দেশের ক্ষতি করলেন, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করলেন, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করলেন, তাদের কী হওয়া উচিত।

‘‘এই বিষয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ আমিও মনে করি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত’’, বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

ড. ইউনূস দেশের জন্য কিছুই করেননি অভিযোগ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ড ইউনূস নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু তিনি দেশের জন্য কী করেছেন? তিনি শহীদদের সম্মান জানাতে শহীদ মিনারে যাননি, স্মৃতিসৌধে যাননি, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সেখানে যাননি। ২১ আগস্ট আমাদের নেত্রীর ওপরে হামলার পর অনেকেই সমবেদনা জানিয়েছেন। কিন্তু ড. ইউনূস জানাননি। ড. ইউনূসদের কাজই হলো দেশের ক্ষতি করা।’

এর আগে স্থানীয় সময় শুক্রবার কানাডার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন গ্রুপের তিন কর্মকর্তাকে পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলা থেকে খালাস দেয় কানাডার অন্টারিও প্রদেশের একটি আদালত। ওই তিনজনের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পেতে বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছিল।

খালাস পাওয়া তিন ব্যক্তি হলেন এসএনসি-লাভালিন গ্রুপের এনার্জি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি-কানাডীয় ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী ভুঁইয়া।

রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) করা ওই মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তবে দুই আসামি মোহাম্মাদ ইসমাইল ও বাংলাদেশের সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন চৌধুরীকে আগেই মামলার নথি থেকে বাদ দেয় পুলিশ।

খালাস পাওয়া তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে তাঁদের টেলিফোন আলাপের রেকর্ড সংগ্রহ করে আরসিএমপি। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধেই ওই টেলিফোন কল রেকর্ড করা হয়। তবে ওই টেলিফোন সংলাপে সাধারণ গল্প-গুজব ছাড়া আর কিছুই ছিল না বলে জানান বিচারক ইয়ান নর্ডহেইমার।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আরসিএমপিকে অনুরোধ জানায়।

এরই ভিত্তিতে আরসিএমপি, কানাডিয়ান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কিছু কর্মকর্তার টেলিফোন সংলাপ রেকর্ড করার অনুমতি নেয়। পরে তারা এসএনসি-লাভালিনের কার্যালয়ে তল্লাশি চালায়। ২০১২ সালে মোহাম্মদ ইসমাইল ও রমেশ শাহকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে কেভিন ওয়ালেস ও বাংলাদেশি কানাডিয়ান ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়াকে এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।

সম্ভাব্য দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০১১ সালে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে যায় বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশ সরকারও বিশ্বব্যাংককে না বলে দেয়। পরে নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেয় সরকার।

২০১৪ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সই করে সরকার। গত মার্চে নির্মাণকাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পদ্মা সেতুর নদীর শাসনের কাজ করছে সিনো হাইড্রো করপোরেশন। চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি মূল সেতুর নির্মাণকাজ করছে।

error: দুঃখিত!