মুন্সিগঞ্জ, ২৬ জুলাই, ২০২০, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
গত কয়েকদিন ধরেই পদ্মার পানি বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া সংলগ্ন এলাকাগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে আশ্রয় খুজে বেড়াচ্ছে শত শত পরিবার।
গতকাল শনিবার লৌহজং উপজেলার নদীঘেষা বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে। বিশেষ করে যারা চরে থাকতেন তাদের অনেকের ঘর-ফসলি জমি মিশে গেছে বন্যার পানির তোড়ে।
লৌহজং উপজেলার পানিবন্দি এলাকাগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার অন্তত ৯টি ইউনিয়নের ৪৯ টি গ্রামের বানভাসি মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন। আর গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত বন্যায় পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ১৩৫০০ পরিবার। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন মাত্র ৩৯২টি পরিবার। বাকিরা নিজ বাসায় পানিবন্দি বা বিভিন্ন আশ্রয়ে রয়েছেন।
এদিকে, আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে ঠিক কত মানুষ অন্যান্য স্থাপনায় বিচ্ছিন্নভাবে আশ্রয় নিয়েছেন, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই উপজেলা প্রশাসনের কাছে।
গতকাল দুপুরের দিকে ঘোড়দৌড় বাজার এলাকায় কথা হয় উপজেলার লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের ভোজগাঁও চরের আব্দুল হক হালদারের সাথে। তিনি বলছিলেন, ২০ বৎসর যাবৎ তিনি এই চরে থাকেন। গত ২০ বৎসরে এইরকম মারাত্মক বন্যা পরিস্থিতির স্বীকার হননি।
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি এত খারাপ হতে পারে, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো পূর্বাভাস ছিল না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কেন পানি বাড়ার আগেই সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হলো না।’
লৌহজং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাজেদা সরকার ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির উপর আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারি রেখেছি। যারা আশ্রয়ের খোঁজে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে আশ্রয় খুজে বেড়াচ্ছে তাদের চিন্হিত করে আশ্রয়কেন্দ্রমুখী করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ২৩ টি আশ্রয়কেন্দ্র পুরোপুরি প্রস্তুত থাকলেও ১৫ টিতে ৩৯২টি পরিবার আশ্রয়ে আছে। তাদের সবরকমের দেখভাল করছে উপজেলা প্রশাসন।
তিনি জানান, আশ্রয়কেন্দ্রের শিশুদের জন্য শিশু খাদ্যের বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া পশুর জন্য গো-খাদ্যের বরাদ্দও রাখা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে তাদের নগদ টাকা দেয়া হচ্ছে।