মুন্সিগঞ্জ, ৬ ডিসেম্বর, ২০২১, সিরাজদিখান প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
দেশের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল হিসেবে খ্যাত মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে কৃষকদের চোখে এখন কষ্টের পানি।
২ দিনের টানা বৃষ্টিতে সিরাজদিখান উপজেলার আলু ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ উপজেলার প্রায় ১০ হাজার আলু চাষী এখন বিপদগ্রস্থ। টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। লগ্নি করে এবং সুদে টাকা এনে আলু ফসল রোপণ করেছেন অনেক কৃষক। সেই আলু এখন কৃষকের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চাষিরা বলছেন, গত এক সপ্তাহের মধ্যে যারা আলুর বীজ রোপণ করেছিল তারা বেশ ক্ষতির আশংঙ্কায় রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র মতে, এবার ৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে উপজেলার বেশীরভাগ জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থামলে কৃষকরা তাদের আলু জমি থেকে পানি সেচের মেশিন লাগিয়ে জমির পানি নিষ্কাশন করবে।
উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আলু চাষী জাকির হোসেন বাবু বলেন
, ‘এবার আমি সাড়ে ৯ হেক্টর জমিতে আলুর বীজ লাগিয়েছি। সার, শ্রমিক খরচ ও জমি চাষ খরচসহ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে আমার সব জমিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। লাভের আশায় লগ্নি করে এবং আত্নীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার এনে আলু চাষ করেছিলাম বৃষ্টি আমার সব কিছু শেষ করে দিল।’
উপজেলার কোলা ইউনিয়নের রক্ষিতপাড়া গ্রামের চাষী আ: রহমান শেখ বলেন, এ বছর অনেক আশা নিয়ে ২ হেক্টর জমিতে আলু বীজ লাগিয়েছি। এ বৃষ্টিতে আলুর বীজের কি অবস্থা তা আল্লাহ জানে। নতুন করে আবার চাষ করতে অনেক টাকা লেগে যাবে। তার উপর সারের দাম, শ্রমিক খরচ কিন্তু বিক্রি করার সময় আলুর দাম না পেলে সব শেষ হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বলছেন, নিম্নচাপ এবং অসময়ে বৃষ্টির কারনে সিরাজদিখানে আলু চাষীদের ক্ষতি হয়েছে। তবে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সিরাজদিখানে আলু বপন শুরু হয়েছিল। যে সকল জমিতে আলুর গাছ বা লতাপাতা গজিয়েছে সেই জমিতে ক্ষতি হওয়ার পরিমান কম আর যে সকল জমিতে সপ্তাহখানেকের মধ্যে লাগিয়েছে তাদের ক্ষতির পরিমান বেশী। তাছাড়া তাৎক্ষনিক সমাধানের জন্য আমাদের কৃষি অফিসের অনেক লোক কাজ করছে।