অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন ও দখল প্রতিযোগিতার কারণে ধলেশ্বরী নদীর মুন্সিগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাঁধকে ঘিরে যে যার ইচ্ছেমতো নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। মুক্তার পুর ঘাট থেকে পঞ্চসার ইউনিয়নের ফিরিঙ্গি বাজার পর্যন্ত প্রতিরক্ষা বাঁধের একাধিক স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আসন্ন বর্ষায় মুন্সিগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের অনেক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
মুক্তারপুর এলাকার বাগবাড়ী ও মালির পাথর এলাকায় বাঁধের অনেকাংশ ভেঙ্গে গেছে, ঝুঁকি নিয়ে চলছে শত শত মালবাহী ট্রাক ও বালুবাহী ট্রলি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নয়াগাঁও, মুক্তারপুর, মালির পাথর, ফিরিঙ্গি বাজার এলাকায় নদীর তীরে বাঁধের ক্ষতি করে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ বালু গদি সেখান থেকে সারদিন ট্রাক ও শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ট্রলি দিয়ে খোলা অবস্থায় বালু পরিবহন করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেয়া হচ্ছে। এতে বাঁধটি একটা বালুর মরুভূমিতে পরিনত হয়েছে। এসব বালু ব্যবসায়ীদের কারণে রিক্সা কিংবা হেঁটে পথচলা বড় দায়। বালু বাতাসে উড়ছে এতে এলাকার পরিবেশ নষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অনেক স্থানে আবার ড্রেজার মেশিন দিয়েও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কোথাও আবার বাঁধ কেটে ড্রেজার মেশিনের পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধের কিনারা থেকে শুরু করে ব্রিজের কিনারা কোনো কিছুই মানছেনা তারা। আবার জাহাজ কিংবা ট্রলার থেকে বিভিন্ন চালের গদি ও সেইলের মালামাল ওঠানামা করানোর জন্য প্রতিরক্ষা বাঁধ কেটে নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তা ও কাঠের পুল। এছাড়াও প্রায় প্রতিদিনই বাঁধের দু’ পাশে নতুন নতুন স্থানে বাঁশের আঁড়া বেঁধে দখলে ব্যস্ত রয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা।
স্থানীয় মুরুব্বি কাশেম আলী বলেন, তাদের আছে বিশাল গোষ্ঠী ও লাঠিয়াল বাহিনী। নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ দখলে সহযোগিতা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল বলেন, আমাদের পর্যপ্ত জনবল নেই, দখলদার উচ্ছেদের জন্য বিচারিক ক্ষমতাও নেই। তবে অবৈধ দখলদারদের একাধিকবার নোটিশ করা হয়েছে তবুও তারা শুনছে না।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ (শিক্ষা , আইসিটি ও সার্বিক) বলেন, সরেজমিনে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।