মুন্সিগঞ্জ, ১৫ মে, ২০২০, লৌহজং প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
দক্ষিন বঙ্গের দিকে শিমুলিয়া ঘাটে মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার সকাল থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট দিয়ে শত শত যাত্রী পার হচ্ছে সাথে বেড়েছে দক্ষিনবঙ্গগামী ছোট ছোট গাড়ির চাপ।
শিমুলিয়া ঘাট থেকে চন্দ্রের বাড়ির নিকট প্রায় দেড় কিলোমিটার লাইন পড়ে গেছে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় থাকা ছোট গাড়ির।
এসব লোকজন ঈদের কেনাকাটা করতে কি ঢাকা এসেছিল নাকী সাধারণ ছুটি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারো তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
শত শত লোক এভাবে ফেরিতে গাদাগাদি করে পার হওয়ায় করোনা সংক্রামন বৃদ্ধি পাবার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকালে শিমুলিয়া ঘাটে দেখা যায়, শত শত লোক ছুটছে দক্ষিনবঙ্গের দিকে। ফেরির অপেক্ষায় পল্টুনের উপর দাঁড়িয়ে আছে হাজারো লোক। যখনই কোন ফেরি আসছে, তখনই এ সকল লোকজন হুমড়ি খেয়ে ছুটে ফেরিতে উঠছে। গাদাগাদি করে তারা ফেরিতে দাঁড়িয়ে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে।
লোকজনের চাপ এতোটাই বেশী যে, গাড়ী পর্যন্ত ঠিকমত ফেরিতে উঠতে পারছিলনা। ফলে দক্ষিনবঙ্গমুখী গাড়ির লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হচ্ছে। শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছোট ছোট গাড়ি বা প্রাইভেট কারের লাইন দেড় কিলোমিটার দূরে চন্দ্রের বাড়ির নিকট চলে গেছে। আবার যাদের একটু করোনায় ভয় আছে, তারা গাদাগাদিতে না গিয়ে দূরে ঘাটের পাশে দাড়িয়ে দেখছে ঘাটের অবস্থা। কী করবে, এভাবে গাদাগাদী করে ফেরিতে যাবে, না একটু হালকা হলে তার পর ফেরিতে উঠবে। করোনা ভয়ে এমনই চিন্তা ভাবনায় পড়ছে লোকগুলো। আবার যারা দক্ষিনবঙ্গ থেকে ঢাকার দিকে আসছে তারাও পড়েছে মহাবিপাকে।
পল্টুনে অপেক্ষামান লোকজন ঠেলে গাড়ী ও ফেরি যাত্রীরা উপরের দিকে উঠতে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বাস বন্ধ থাকায় ঢাকা থেকে যাত্রীরা মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, লেগুনা, মোটর সাইকেল ও উবারের অফলাইনের গাড়ীতে করে শিমুলিয়া ঘাটে আসছে। আর শিমুলিয়া ঘাটে লঞ্চ সিবোট বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পার হচ্ছে ফেরিতে।
মাওয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ পরিদর্শক সিরাজুল কবির জানান, মনে হচ্ছে,ঈদের কেনা-কাটা শেষে লোকজন ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছে। দক্ষিনবঙ্গমুখী শত শত লোক আজ শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি দিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটছে। এইতো মাত্র কয়েক দিন আগেও ঢাকামুখী যাত্রীর ঢল ছিল, আর আজ শুরু হয়েছে দক্ষিনবঙ্গমুখী যাত্রীর ঢল। দেখলে মনে হয় এরা ঈদের শপিং করতে ঢাকায় গিয়েছিল। শপিং শেষে এখন তারা বাড়ি ফিরছে। তবে আসল কথা হচ্ছে যে আশায় তারা ঢাকা গিয়েছিল তা হয়তো পূর্ণ না হওয়ায় তারা আবার বাড়ি ফিরছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটস্থ এজিএম মো.শফিকুল ইসলাম জানান, ১৩টি ফেরি চলাচল করলেও দক্ষিনবঙ্গমুখী গাড়ী ও যাত্রীর চাপে লোডিং আনলোডিংয়ে সমস্যা হচ্ছে। পল্টুনে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া করোনা ভয়ে স্টাফরা ঠিক মত কাজ করতে পারছেনা। তারা গাদাগাদির মধ্যে যেতে যাচ্ছে না। আমাদের একজন স্টাফ ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে আজ দক্ষিনবঙ্গমুখী যাত্রীর ঢল নেমেছে।