২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শনিবার | দুপুর ২:৫৯
মুন্সিগঞ্জ ল্যাবএইডের বিরুদ্ধে ভুল মেডিকেল রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ শহরে অবস্থিত ল্যাবএইড লিমিটেডে (ডায়াগনস্টিকস) রক্তের পরীক্ষায় ভুল মেডিকেল রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ তুলে জেলা সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী।

গতকাল মঙ্গলবার জাকিয়া সুলতানা দোলা (২৪) নামের ওই নারী সিভিল সার্জনের সাথে দেখা করে অভিযোগটি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

অভিযোগে তিনি লিখেছেন, ‘শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকসের মুন্সিগঞ্জ শাখায় মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মমতাজুল হক অমির শরনাপন্ন হই। তিনি আমাকে প্রথমেই CBC টেস্ট (রোগীর যেকোনো ধরণের ব্যাধি সনাক্তে রক্ত পরীক্ষা) করে নিয়ে আসতে বলেন। আমি তৎক্ষণাৎ ল্যাবএইডের কাউন্টার থেকে রিসিট কেটে টেস্ট করতে দেই। দুই ঘন্টা পর আমার রিপোর্ট প্রস্তুত হলে সেটি নিয়ে পুনরায় নিয়ে ডাক্তারকে দেখাই।

রিপোর্ট দেখে তিনি আমাকে জানান, আমার রক্তের মোট WBC এর পরিমাণ ১৪ হাজার এবং আমার রক্তে বড় ভাইরাস হয়েছে। এই ভাইরাসের কারণে আমার শরীরে ক্যান্সারের সংক্রমণ হতে পারে।

তার কথা শুনে আমি ভয় ও আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ি। এরপর আমি ল্যাবএইডে করানো ওই রিপোর্টটি আমার পরিচয় গোপন রেখে অন্য কয়েকজন পরিচিত ডাক্তারকে দেখাই। তারা আমাকে বলেন যে, এই রিপোর্টটি যার তাকে দ্রুত দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। তার জীবন শঙ্কায় রয়েছে। এরমধ্যে একজন আমাকে পরামর্শ দেন, অন্য কোন ডায়াগনস্টিকস সেন্টারে পুনরায় একটি টেস্ট করিয়ে নিতে।

পরদিন ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে আমি শহরের রেনেসা ডায়াগনস্টিক কেয়ারে পুনরায় একটি CBC টেস্ট করাই। পরে সেটি আবার ল্যাবএইডের ডা. মমতাজুল হককে দেখালে তিনি সেটি দেখে বলেন, আমার টেস্টের রিপোর্ট ভালো ও স্বাভাবিক।

আমি এরপর দ্বিধান্বিত হয়ে পরি এবং একই তারিখে নারায়ণগঞ্জ পপুলার ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে গিয়ে আবারও আমার CBC টেস্ট করি। সেই রিপোর্টও ল্যাবএইডের ডা. মমতাজুল হককে দেখালে আমার রিপোর্ট ভালো ও স্বাভাবিক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তার মানে ল্যাবএইডের যে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক আমাকে বললেন ‘আমার রক্তে বড় ভাইরাস হয়েছে’ সেই রিপোর্টটি ভুল। এই ভুয়া রিপোর্টের কারণে আমি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি। কোন যাচাই বাছাই ছাড়াই যদি ল্যাবএইডের ভুয়া রিপোর্টের কারণে ঔষধ খেতাম তাহলে আমার শরীরে অন্য যেকোন সমস্যা হতে পারতো।

তিনি বলেন, ‘আমাকে ভুয়া মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট দিয়ে হয়রানি করার বিষয়ে ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিকসের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অভিযোগের বিষয়ে ল্যাবএইড লিমিটেড (ডায়াগনস্টিকস) মুন্সিগঞ্জের ম্যানেজার পলাশ চন্দ্র বলেন, রিপোর্ট ভুল আসাটা নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। আমার প্রতিষ্ঠানের যে সকল কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই রিপোর্ট প্রদানের সাথে জড়িত তাদের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখা চাওয়া হবে। ভুক্তভোগীর যে কোন ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা সেটি করবো।’

error: দুঃখিত!