মুন্সিগঞ্জ, ১১ জুন ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
বিএনপির ভরা দুঃসময় ২০০৮-২০২৪ সময়ে মুন্সিগঞ্জে যে কয়েকজন নেতা সাহসী ভূমিকা, দলের প্রতি আনুগত্য ও নেতাকর্মীদের করণীয় নির্ধারণে প্রথম সারিতে থেকে অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে একজন হলেন সদ্য ঘোষিত জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও শহর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শাহাদাত হোসেন সরকার (৫৫)। একেবারে ওয়ার্ড পর্যায় থেকে উঠে আসা এই নেতা বিগত ১৬ বছর জেলা ও ঢাকায় বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচিগুলো সফল করতে হামলা-মামলা ও প্রশাসনের অব্যাহত হুমকি উপেক্ষা করেও অর্থ সহায়তা দিয়ে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছেন বলে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।
শাহাদাত হোসেন ১৯৮৬ সালে ছাত্র অবস্থায় যুক্ত হন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে। সেইসময় থেকেই তিনি বিএনপির দলীয় রাজনীতির সাথে পুরোপুরি সক্রিয় হন। রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শাহাদাত। তার আপন বড় ভাই সাইদুর রহমান মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
মুন্সিগঞ্জ শহরের দক্ষিণ ইসলামপুরের বাসিন্দা মৃত সোনা মিয়া বেপারির পুত্র শাহাদাত হোসেন বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ আমলে দায়িত্ব পালন করেছেন, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ হিসাবে। সর্বশেষ শহর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। গত ৬ জুন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির ৫৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটিতে সদস্য পদ লাভ করেন শাহাদাত হোসেন ।
একাধিক হয়রানিমূলক মামলায় আসামি
পতিত আওয়ামী আমলে বহু রাজনৈতিক ‘হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা’ ও কারাবরণ সহ্য করেছেন শাহাদাত হোসেন। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ব্যবসায়ীকভাবেও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে ভূমিকা রাখায় দুইটি মিথ্যা মামলা হয় শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে। মামলা নং- ৬; তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ এবং মামলা নং- ৩৮; তারিখ ২০ মার্চ ২০১৫।
২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য ও মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হাইয়ের পক্ষে ভূমিকা রাখায় শহরের উওর ইসলামপুরে নৌকার ক্যাম্প পোড়ানোর মিথ্যা মামলায় হুকুমের আসামি করা হয় তাকে। মামলা নং- ৪২/৬৮৩; তারিখ: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮।
২০২২ সালের ঢাকার গোলাপবাগের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ‘মিথ্যা মামলা’য় আসামি করা হয় শাহাদাত হোসেনকে। মামলা নং- ৫২, তারিখ: ২৮/১১/২০২২।
২০২৩ সালে মুন্সিগঞ্জ সদরের মুক্তারপুর এলাকায় পুলিশ কতৃক গুলি করে যুবদল নেতা শাওনকে হত্যার পর মিথ্যা মামলা দেয়া হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সেই মামলায়ও আসামি করা হয় শাহাদাত হোসেনকে।
এছাড়া শুধুমাত্র বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহুর্তে শাহাদাত হোসেনকে অন্যায়ভাবে ধরে নিয়ে যায় যৌথবাহিনী। আওয়ামী লীগ কর্মী শাহীন মিয়া হত্যাকাণ্ডের সাথে কোনভাবে জড়িত না থাকলেও চার্জশিটে প্রধান আসামি করা হয় তাকে। পরে দীর্ঘদিন আদালতে মামলা লড়ে খালাস পান তিনি।
ব্যক্তি জীবনে শাহাদাত হোসেন একজন সফল ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা। তিনি মুন্সিগঞ্জ আরবান ডেভেলপার্স লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সারা বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান। মুন্সিগঞ্জ শহরের আফতাব উদ্দিন কমপ্লেক্স, আরবান মোহাম্মদ আলী স্কয়ার, সিটি গার্ডেন স্বর্ণ মার্কেটসহ শহরের বেশ কয়েকটি স্বনামধণ্য মার্কেট-শপিং কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে শাহাদাত হোসেনের হাত ধরে।এছাড়া দক্ষিণ ইসলামপুর কবরস্থান উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও শহর ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়া শাহাদাত হোসেনের একমাত্র ছেলে ডা. মো. সালিম আহমেদ সায়ের জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানেও তিনি ছাত্রদল তথা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত আছেন।
জেলা বিএনপির নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটিতে পদ পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ, খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব, তারেক রহমানের নির্দেশনা ও মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের সাংগঠনিক শক্তি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে দল ঘোষিত ৩১ দফার বাস্তবায়ন ও তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে অবিচল রয়েছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। নির্বাচনমুখী বর্তমান পরিস্থিতিতে সবকিছু মিলিয়ে বিএনপির মত একটি বড় রাজনৈতিক দলের পাশে থাকতে পারা সৌভাগ্যের।’