মুন্সিগঞ্জ, ১৮ আগস্ট ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
গেল ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শহরের উত্তর ইসলামপুরের বাসিন্দা রিয়াজুল ফরাজীকে (৩৮) গুলি করে হত্যার দায়ে ১৬ দিন পর মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লবকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
ওই মামলায় ৭ জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাসহ ২০৮ জনের নাম রয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০/৩০০ জনকে।
গুলি করে হত্যার অভিযোগে আজ মঙ্গলবার রাত একটার দিকে সদর থানায় মামলাটি দায়ের হয়। এতে বাদী হয়েছেন নিহত রিয়াজুল ফরাজীর স্ত্রী রুমা বেগম।
মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে মামলার আসামিদের বিষয়ে তিনি তথ্য দিতে রাজি হননি।
অন্য একটি সূত্রমতে মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন, গজারিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, মিরকাদিম পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিন, পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, রামপাল ইউপি চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ, মহাকালি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ঢালী, মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারি, শিলই ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ মৃধা, বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন পীর, চরকেওয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভুইয়া (আফছু), সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির মাষ্টার, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুরুজ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান লাকুম, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম নোবেল, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসাইন সাগর, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নিবির আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, শহর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রায়হানুজ্জামান রাসেলসহ এজাহারনামীয় সর্বমোট ২০৮ জন।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার বলেন, ‘তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
প্রসঙ্গত; গত ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেটে এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে জেলা সদরের চরাঞ্চল থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, তার পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব ও তার স্ত্রী মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারী। আগেরদিনই তারা মোবাইল ফোন ও সাক্ষাৎয়ে এই নির্দেশ পান।
ওইদিনের ঘটনায় ৩ জন নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়া অন্তত ৯৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন দেড় শতাধিক।
আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ফরাজী (৩৫), মো. সজল (৩০) ও ডিপজল (১৯)। নিহতদের মধ্যে রিয়াজুল মৃত কাজী মতিনের ছেলে, সজল আলী আকবরের ছেলে ও ডিপজল সিরাজ সরদারের ছেলে। এরা সকলেই শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।