২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মঙ্গলবার | রাত ১১:০৮
মুন্সিগঞ্জে সম্পত্তির লোভে আপন ভাইকে খুন করলো বোন!
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, রুবেল ইসলাম তাহমিদ, (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয় উপজেলার দক্ষিণ মেদিনী মন্ডল গ্রামের মোঃ ইব্রাহীম হাওলাদার (৩৩) কে সম্পত্তি ভাগাভাগির জেরে নির্মমভাবে তার বোনের হুকুমে হত্যা করার ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এই ঘটনায় নিহতের আপন বোন গ্রেফতার হলেও পলাতক রয়েছে ঘটনার সাথে জড়িত ২ভাগ্নে।

গত শুক্রবার (৩০শে আগষ্ট) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার দক্ষিন মেদিনীমন্ডল এলাকায় বোন ও ভাগ্নে মিলে টর্চ লাইট দিয়ে পিটিয়ে ভাই ইব্রাহিমকে হত্যা করে।

ইব্রাহিমের স্ত্রী শিরিন আক্তার লিমা বাদী হয়ে দুই ভাগ্নে ও ননদকে আসামী করে লৌহজং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার দিন শুক্রবার রাতেই নিহত ইব্রাহিম হাওলাদারের বোন সুলতানা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নিহত ইব্রাহিম হাওলাদারের স্ত্রী শিরিন আক্তার লিমা একান্ত আলাপচারিতায় ঘটনার নেপথ্যে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী র্দীঘ ১১ বছর সৌদি আরবে প্রবাসী ছিলেন। বিদেশ থেকে ১১ বছর যা রোজগার করেছে তা আপন বোন সুলতানার কাছেই পাঠিয়েছেন। কিছুদিন আগে আমার স্বামী দেশে আসলে বোনের কাছে টাকা চাওয়ায় টাকা না দিয়ে নানা তালবাহানা করে। এ নিয়ে কয়েক দফা দেন দরবার হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত শুক্রবার ঘটনার দিন আমি ও আমার স্বামী দুইজনে মিলে আমার বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় আমার স্বামী ইব্রাহিমকে ঘর থেকে ডেকে নেয় বোন সুলতানা বেগম। আমার বাপের বাড়ি যাওয়া দরকার নেই বলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই ভাগ্নে সেলিম ও শামিম টর্চ লাইট দিয়ে গলায় ও ঘারে আঘাত করে। তাৎক্ষনিকভাবে আমার স্বামী মাটিতে লুটিয়ে পরে।’

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।

‘এ ঘটনায় আমার ননদ ও দুই ভাগ্নেকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী করছি। ’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিবারে পাচঁ বোন বড় ভাই হাসু সহ ইব্রাহিম ছোট, বাবা মোঃ রতন হাওলাদার গেল ২০১৪ শালে মারা যান। সে সময়ের বহু আগে থেকে বোন সুলতানা নিজ শশুর বাড়ি কামারগাওঁ গ্রামে হলেও স্বামীকে কে নিয়ে এ বাড়িতে এক যুগের বেশি থাকছেন, তাছাড়া আরও ২ বোনেরও শশুরবাড়ি কাছাকাছি থাকায় মাসের পর মাস জামাই সন্তান সহ তারা এখানেই থাকেন।

নিহত ইব্রাহিমের বাবা মৃত রতন হাওলাদার এর ক্যাশ টাকা সহ ব্যবসায়ী টাকা মিলিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা রেখে যান। সে সব টাকা বোন সুলতানার কাছে । এ ছাড়াও বাবা মৃত রতন হাওলাদারের মাওয়া বাজারে একটি মুদি দোকান রয়েছে সে দোকানের আয় দিয়ে বোন মায়ের সংসার চলছিল। বাবার রেখে যাওয়া টাকা থেকে ইব্রাহিমের আরও এক ভাই মৃত হাসু হাওলাদের চিকিৎসায় ব্যয় করেছে বলে জানান তারা।

তারা আরও জানান, মৃত হাসু হাওলাদারের বিয়ের এক যুগ পার করলেও তার স্ত্রীকে বাড়ি উঠতে দেয়নি বোন সুলতানা বেগম।

হাসু হাওলাদার বিগত ২০১৭ সালে হার্ট এ্যাটাক করে মৃত্যু বরন করেন।

এ বিষয়ে লৌহজং থানার ওসি মোঃ আলমঙ্গীর হোসেন জানান, নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী লিমা বাদী হয়ে ননাশ ও ২ ভাগ্নে সহ মোট তিন জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় ১ নম্বর আসামী নিহতের বোন সুলতানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আসামী সুলতানাকে ৫দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে গত শনিবার এবং তার দুই ছেলেকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, নিহত ইব্রাহিমের গলায় ও ঘারে এবং তার অন্ডকোষে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে।

error: দুঃখিত!