২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | দুপুর ১:১৯
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে যুবদল নেতার মৃত্যু নিয়ে চারিদিকে নানা প্রশ্ন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২ নভেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ সদরের আধারা ইউনিয়নের জাজিরা গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা পাড়ে রাতের আধারে শান্ত আহমেদ (৩৫) নামে এক বালু ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের দানা বেঁধেছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহল ছাড়াও চারিদিকে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

এর পেছনে মেঘনা নদীর বৈধ-অবৈধ বালু মহালের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা রয়েছে। রাতে যে গাড়িটি করে আহত অবস্থায় শান্তকে হাসপাতালে আনা হয় সারাদিনেও সেটির কুলকিনারা পাওয়া যায়নি।

সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শান্ত শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার্ধীন অবস্থায় মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ মুন্সিগঞ্জে নিয়ে আসা হবে বলে পরিবার জানিয়েছে।

পুলিশ বলছে, শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে মেঘনা নদীতে স্পিডবোট ও ইঞ্জিন চালিত মাছ ধরার ট্রলারের মধ্যে সংঘর্ষে যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ৪ জন আহত হয়।

তবে নিহতের পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। সে নদীতে যায়নি পর্যন্ত।

নিহত শান্ত জেলা সদরের চরকেওয়ার ইউনিয়নের উত্তর চরমশুরা গ্রামের বোরহান সরকারের ছেলে। সে স্ত্রী-সন্ত্রান নিয়ে জেলা শহরের মানিকপুর এলাকার দরবার প্যালেসের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন রাত ১০ টার দিকে স্পিডবোটে করে ৮-১০ জনের একটি গ্রুপ নিয়ে জাজিরা গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে যান যুবদল নেতা শান্ত। এসময় দ্রুত গতির ইঞ্জিন চালিত একটি মাছ ধরার ট্রলারের সঙ্গে স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়। এতে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।

সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শান্ত আহমেদ (৩৫), শামীম (৩৫), শাহাদাত (৩৮) ও মিন্টুকে (৪৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে সেখান থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত আড়াইটার দিকে শান্ত মারা যান।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিনগত রাত ৯ টার দিকে শহরের বাসা থেকে জরুরী কাজের কথা বলে বের হন যুবদল নেতা শান্ত। ঘন্টা খানেক বাদে রাত ১০ টার দিকে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন শান্তকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে ঢাকায় নেওয়ার পর স্কয়ার হাসপাতালে মারা যায় সে।

নিহতের ছোট ভাই মামুন সরকার বলেন, ‘ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আমার ভাই নদীতেই যায়নি। স্পিডবোটের সাথে ট্রলারের সংঘর্ষ হলে তার শরীর একটু হলেও পানিতে ভেজা থাকতো। তাছাড়া তার বুকের পাজর ভেঙে গেছে। মাথায় ধারালো বস্তুর আঘাতের চিহ্ন আছে। আবার তাকে নদীর পার থেকে একটি সাদা হাইস গাড়িতে করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। ওই গাড়ি কার। এত দ্রুত কিভাবে ওখানে গাড়ি গেলো।’

মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবু হেনা মো. জামাল বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আহত অবস্থায় শামীম, শাহাদাত, আশেক আলী, মিন্টু ও শান্ত আহমেদ নামে ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে শামীম, শাহাদাত ও শান্তর অবস্থা গুরুতর থাকায় তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শান্ত নামে একজন মারা যান।’

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এটি স্পিডবোট ও ট্রলারের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যু বলে ধারণা করা যাচ্ছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বালুমহাল সংক্রান্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া মৌখিক অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করছে পুলিশ। এছাড়া শান্তকে হাসপাতালে নিয়ে আসায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি সনাক্তের চেষ্টা চলছে।’

নিহত শান্ত বালু ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

error: দুঃখিত!