মুন্সিগঞ্জ, ২৫ মার্চ, ২০২০, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
দেখতে হুবহু আসল ঔষুধের মতো। জনপ্রিয় গ্যাষ্ট্রিকের ঔষুধ সেকলোর মত দেখতে চার পাতা ঔষুধের দাম এখানে ৪০টাকা। প্রতি রবি ও বুধবারে বসে হাট। এই হাট থেকে এইসব ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষুধ ও স্যালাইন ছড়িয়ে পড়ে মুন্সিগঞ্জ সদরের কয়েক হাজার মুদি দোকানে।
এমন সব তথ্য পেয়ে মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাপুরের জেলেপাড়া এলাকার বিসমিল্লাহ ষ্টোর ও পাশেই অবস্থিত রোজা ড্রাগ হাউজে অভিযান চালায় মুন্সিগঞ্জ ঔষুধ প্রশাসন।
বুধবার (২৫ মার্চ) ভোড় সাড়ে ৬ টায় আকষ্মিক এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
পুরো অভিযানের ভিডিওঃ
এসময় বিসমিল্লাহ ষ্টোর এর মালিক রিপন বেপারী (৪০) এর দোকান, বাসাঘড়, রান্নাঘড় এবং পাশের আরও দুটি ঘড় থেকে বিপুল পরিমান নকল ভারতীয় ঔষুধ, রেজিষ্ট্রেশনবিহীন ঔষুধ ও সরকারি ক্রয় নিষিদ্ধ ঔষুধ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া সেখানে বিপুল পরিমাণ নিম্নমানের ওরস্যালাইন মজুদ করে রাখতে দেখা যায়। এসব নিম্নমানের ওরস্যালাইন মুন্সিগঞ্জ সদরের কয়েকশত মুদি দোকানদারে কাছে পাইকারি দামে সাইকেল যোগে পৌছে দেয়া হয়।
অভিযানে মুদি দোকান ও তার ৪টি বাসা থেকে মজুদ করা অবস্থায় বিপু্ল পরিমান নকল ভারতীয় Skinshine Cream, ব্যাথানাশক ভারতীয় লোগো সম্বলিত নকল Diclo M, COFIMOL, BETNOVATE-N, দ্রুত যৌন উত্তেজনাবৃদ্ধি করার ট্যাবলেট SANAGRA-100, New CIP-100, CEEZIN-10, নকল ভিটামিন সি ট্যাবলেট VITA-C, ৩০০ বক্স বিক্রয় নিষিদ্ধ সরকারি নিরাপদ কনডম জব্দ করা হয়।
দুইটি ঘড় ভর্তি এসএমসির নকল লোগো সম্বলিত নিম্নমানের ১৭৬ বক্স ওরস্যালাইন ও ইউনিভার্সাল এর লোগো সম্বলিত নিম্নমানের ৬৮ বক্স টেষ্টি স্যালাইন মজুদ অবস্থায় পাওয়া যা্য়।
মুন্সিগঞ্জ ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক মাহবুব হোসেন ও টংগিবাড়ী উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উছেন মে এই অভিযান পরিচালনা করেন।
বিসমিল্লাহ ষ্টোরের মালিক ও এইসব অপকের্মের মূল হোতা রিপন বেপারীকে এসময় ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেয়া হয়। রিপন জেলে পাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
একই সময় পাশে থাকা রোজা ড্রাগ হাউজ নামক ফার্মেসীতে সরকারী হাসপাতালের বিপুল পরিমান ঔষুধ পাওয়ায় ফার্মেসীর মালিক ওমর সানীকে নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ২ জনকে মোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করার পর ছেড়ে দেয়া হয়।
অভিযান শেষে মুন্সিগঞ্জ ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক মাহবুব হোসেন ‘আমার বিক্রমপুর’ কে জানান, ‘মুন্সিগঞ্জের মানুষের সাথে প্রতারিত করে এই ধুরন্ধর চালাক লোকটি দীর্ঘদিন যাবৎ এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলো বলে তথ্য পেয়ে প্রশাসনের সহায়তায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।’
টংগিবাড়ী উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উছেন মে ‘আমার বিক্রমপুর’ কে বলেন, ‘একজন মুদি দোকানদার এভাবে মজুদ করে নকল ও নিম্নমানের ঔষুধ বিক্রয় করতে পারেন না। তাছাড়া উনার লাইসেন্সও নেই। এরকম তথ্য পেলে আরও অভিযান পরিচালনা করা হবে। এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে।’