মুন্সিগঞ্জ, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, আদালত প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জে ট্রলার চালক আবু তালেবকে (৪০) হত্যার দায়ে আনিছ (২৫) নামের এক আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অপর আসামি সেলিম মিয়াকে (৩৪) ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার বিকেল ৩ টার দিকে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক ড. মো. আলমগীর এ রায় দেন। এ সময় অপর আরও ৬ জন আসামিকে মামলার দায় হতে খালাস দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাছান ছারওয়ার্দী।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি আনিছ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার চর কিশোরগঞ্জ গ্রামের হাসমত আলী বেপারীর ছেলে ও আসামি সেলিম মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার চিৎকার গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গজারিয়া উপজেলার গুচ্ছগ্রামের আবু তালেব ইঞ্জিনচালিত ট্রলার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঘটনার আগ থেকে অভিযুক্ত আনিছ আবু তালেবকে বিভিন্ন জায়গায় মালামাল নিতে বলতেন। আবু তালেব আনিছের কথায় কোথাও যেতে চাইত না। গত ২০০৮ সালের ১৬ জুন সকাল ৮ টায় আনিছ আবু তালেবের বাড়ি এসে সিমেন্টের পণ্য টানার কথা বলে চলে যায়। দুপুর ২ টায় আনিছ আবু তালেবকে ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীতে যেতে বললে আবু তালেব ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীতে যায়। পরে আবু তালেব বাড়িতে ফেরত না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আনিছসহ অজ্ঞাত নামা আরও ৪-৫ জন আসামি শ্রেণীভুক্ত করে গত ২০০৮ সালের ২০ জুন গজারিয়া থানায় আবু তালেবের স্ত্রী আয়েশা (২৮) বাদী হয়ে অপহরণের মামলা করেন।
পরে আবু তালেবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ আনিছকে গ্রেফতার করলে আনিছ আদালতে ঘটনার বিষয়ে ও জড়িত থাকা আসামিদের নামসহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আসামি আনিছের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ আসামি সেলিমকে গ্রেপ্তার করলে সেলিম আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। ১৬ বছরে মামলায় ৯ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবন্দির ভিত্তিতে আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ২০০৮ সালের ১৬ জুন গজারিয়ার গুচ্ছগ্রামের ট্রলার চালক আবু তালেবকে অপহরণ করে হত্যার দায়ে আসামি আনিছকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অপর আসামি সেলিম মিয়াকে ভিন্ন ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিচারকের রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।