২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শুক্রবার | দুপুর ১:৩৭
মুন্সিগঞ্জে ‘কোন্দলে’ কর্মী হারাচ্ছে অাওয়ামীলীগ
খবরটি শেয়ার করুন:

[four_fifth_last]শিহাব অাহমেদঃ টানা ৭বৎসর ক্ষমতায় অাছে অাওয়ামীলীগ। জেলার সবকয়টি সংসদীয় অাসনে ৭বৎসর যাবৎই অাছে অাওয়ামীলীগের সংসদ সদস্যরা। উন্নয়নের সমীকরণ দেশের অন্য সব জেলার তুলনায় বেশি। ৬উপজেলার চেয়ারম্যানও অাওয়ামীলীগের। এসব কারণে ৭বৎসরে জেলায় অাওয়ামীলীগের কর্মী-সমর্থক কয়েকগুণ বাড়ার কথা থাকলেও উল্টো কমেছে মুন্সিগঞ্জে।

জেলার সব কয়টি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে রয়েছে এমন চিত্র।

সদর উপজেলা ও গজারিয়ায় স্থানীয় সাংসদ মৃণাল কান্তি দাসের রয়েছে নিজস্ব লোকবল। এরা সবাই সাবেক সাংসদ ও জেলা অা.লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন বিমুখ। মৃণাল-মহিউদ্দিন দ্বন্দ্বই এর মূল কারন। অাবার মহিউদ্দিনের নিজস্ব লোকবল মৃণালের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। তারাও মৃণাল বিমুখ। এর অাগে এখানে দ্বন্দ্বে ছিলেন জেলা অাওয়ামীলীগ সভাপতি মহিউদ্দিন এর ছোট ভাই ও উপজেলা চেয়ারম্যান অানিসুজ্জামান অানিস। অানিসেরও ছিলো অালাদা নিজস্ব লোকবল। অানিস একসময় মৃণালের অনুগামী রাজনীতিবিদ ছিলেন। মৃণাল কান্তি দাসের সরাসরি সহযোগীতায় নিজে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ছেলে জেলা যুবলীগ সভাপতি হওয়ার পর মৃণালকে ছেড়ে নিজের ভাইয়ের কাছে ফিরে গেছেন অানিস। এখনো মৃণাল ছাড়াই রাজনীতি করে যাচ্ছেন অানিস ও তার দুই ছেলে।

নেতাদের এমন অবস্থায় দুর্দশাগ্রস্ত হচ্ছেন মূলত তৃণমূলের সাধারণ কর্মীরা। রাজনৈতিক কর্মসূচীতে এইসকল অসংখ্য কর্মীরা মৃণাল পন্থী নেতাদের সাথে গেলে বাধাগ্রস্থ হন মহিউদ্দিন পন্থী নেতাদের কাছে। অাবার মহিউদ্দিন পন্থী নেতাদের সাথে গেলে কথা শোনেন মৃণাল পন্থী নেতাদের কাছ থেকে।

এমন অবস্থা একসময় বিরক্তের কারণ হয়ে দাড়ায় কর্মীদের কাছে। একসময় তাদের মনে হতে থাকে ‘অাওয়ামীলীগের রাজনীতি থেকে দূরে থাকাই ভালো’ তখন নেতারা এই কর্মীদের ডাকলেও অার সারা দেন না। তারা রাজনীতি ছেড়ে ব্যক্তিগত কাজে মনোযোগ দেন। এমন অবস্থার প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে ইদানীং। কর্মসূচি পালন হয় কর্মী ছাড়াই। প্রচারের একমাত্র সম্বল হয়ে উঠে মিডিয়া।

একই চিত্র অাছে সিরাজদিখানে। সেখানে সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এর সাথে দ্বন্দ্ব উপজেলা অাওয়ামীলীগ সভাপতি মহিউদ্দিন এর সাথে। অার কৌশলে-অপ্রকাশ্যে বিরোধে অাছেন অাওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম সারওয়ার কবির। মহিউদ্দিন, সুকুমার ও কবির প্রত্যেকেরই অালাদা লোকবল রয়েছে। তাদেরও অাবার অালাদা অালাদা কর্মী রয়েছে। এদের অবস্থাও সদরের মত। এখানে পিটানো থেকে শুরু করে খুন পর্যন্ত সবকিছুর দায় পরে সাংসদ সুকুমারের উপর। এতে অাতঙ্কিত অবস্থায় থাকে সুকুমার অনুসারী নেতা-কর্মীরা।

জেলার টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং, শ্রীনগর, গজারিয়া সব জায়গায়ই ছন্নছাড়া অবস্থা হয়ে যাচ্ছে অাওয়ামীলীগের। দলের স্বার্থ উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের চেষ্টায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দল ‘অাওয়ামীলীগ’। অন্য দিক দিয়ে সরকারের উন্নয়নের অালোচনার চেয়ে এসব কোন্দলের প্রচার ও অালোচনাই বেশি হচ্ছে তৃণমূলে। এমন অবস্থায় নতুন কর্মী-সমর্থক বাড়ার বদলে কমছেই বেশী। এই অবস্থা উত্তরণে একমাত্র ভরসা দলের সভানেত্রী-সাধারণ মানুষের মন্তব্য এমনই। সরাসরি শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে ‘কোন্দল’ দূর করতে পারলে বিশেষ করে লৌহজং উপজেলায় পদ্মা সেতু ও সেতুকেন্দ্রীক অন্যন্যা উন্নয়ন মানুষ যেভাবে ভোগ করবে তাতে মুন্সিগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যতম অাওয়ামীলীগ অধ্যুষিত এলাকায় পরিণত হওয়ার কথা।

একমাত্র অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক কোন্দলই ম্লান করে দিচ্ছে অাওয়ামীলীগের অর্জন। কর্মী হারাচ্ছে অাওয়ামীলীগ।

error: দুঃখিত!