৯ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শনিবার | রাত ৮:২৯
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
মুন্সিগঞ্জে আরও এক হ.ত্যা মামলা, মহিউদ্দিন-বিপ্লব-সোহানাসহ ৪৫১ আসামি
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

গেল ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শহরের উত্তর ইসলামপুরের বাসিন্দা সজল মোল্লাকে (৩০) হত্যার দায়ে ৪৫১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। এ নিয়ে মুন্সিগঞ্জে আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় ৩টি মামলা দায়ের হলো।

এই মামলায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতা ও অন্তত ১০ জন জনপ্রতিনিধিসহ ৩০১ জনের নাম রয়েছে। অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জনসহ সর্বমোট আসামি ৪৫১ জন।

গুলি করে হত্যার অভিযোগে আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সদর থানায় মামলাটি দায়ের হয়। এতে বাদী হয়েছেন নিহত সজলের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ২০ আগস্ট রিয়াজুল ফরাজীকে গুলি করে হত্যার দায়ে তার স্ত্রী রুমা বেগম বাদী হয়ে প্রথম হত্যা মামলাটি করেন। ওই মামলায় ২০৮ জনের নাম রয়েছে। অজ্ঞাতনামা ২০০/৩০০ জনসহ সর্বমোট আসামি ৫০৮ জন। দ্বিতীয় মামলা হয় ৩০ আগস্ট নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজল হত্যার ঘটনায়। বাদী হন ডিপজলের নানী শেফালি বেগম। এই মামলায় নামোল্লেখ করে আসামি করা হয় ৩১৪ জনকে অজ্ঞাতনামা ২০০/৩০০ জনসহ সর্বমোট আসামি ৬১৪ জন।

সূত্রমতে মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস উজ্জামান, মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব (জানুয়ারি ২০২৪-আগস্ট ২৪), জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহানা তাহমিনা, আনিস উজ্জামানের দুই পুত্র আক্তার উজ্জামান রাজিব ও জালাল উদ্দিন রুমি রাজন, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম নোবেল, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসাইন সাগর, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান লাকুম, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নিবির আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির মাষ্টার, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভু্ইয়া, শহর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রায়হানুজ্জামান রাসেল, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, যুবলীগ নেতা আব্দুর রহমান গাজী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভুইয়ার পুত্র মাহমুদুল হাসান সাদি প্রমুখ।

জনপ্রতিনিধিরা হলেন- পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, চরকেওয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন ভুইয়া, আধারা ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, বাংলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন পীর, শিলই ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ মৃধা, মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারি, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সোহেল রানা রানু, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মকবুল হোসেন, পঞ্চসার ইউপি সদস্য জাহিদ হাসান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত; ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে জেলা সদরের চরাঞ্চল থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, তার পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব ও তার স্ত্রী মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারী। আগেরদিনই তারা মোবাইল ফোন ও সাক্ষাৎয়ে এই নির্দেশ পান।

ওইদিনের ঘটনায় ৩ জন নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। এছাড়া অন্তত ৯৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন দেড় শতাধিক।

আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ফরাজী (৩৮), মো. সজল মোল্লা (৩০) ও নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজল (২২)। নিহতদের মধ্যে রিয়াজুল মৃত কাজী মতিনের ছেলে, সজল আলী আকবর মোল্লার ছেলে ও ডিপজল সিরাজ সরদারের ছেলে। এরা সকলেই শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা।

error: দুঃখিত!