১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বুধবার | সকাল ১০:৫৩
মুন্সিগঞ্জে আগুনে পুড়ে দগ্ধ ভাই-বোনের মৃত্যু, আইসিইউতে বাবা-মা
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১, সদর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জে ফ্ল্যাটের মধ্যে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে আহত ভাই বোন মারা গেছে।

ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।‌ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যায়। নিহতরা হলেন ইয়াছিন (৫) ও নোহর (৩)। তারা আপন ভাই-বোন।

রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে দুই ভাই-বোনের মৃত্যু হয়।

৭টার দিকে ইয়াছিন মারা যায়। তার শরীরের ৪৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তার বোন নোহর মারা যায় রাত সোয়া ৯টার দিকে। তার শরীরের ৩২ শতাংশ দগ্ধ ছিল।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে ওই ‍দুই শিশুর বাবা কাউছার ও মা শান্তাও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব খান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘দগ্ধ দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঢাকায় ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। শিশুর বাবা কাউছার ও মা শান্তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাদের আইসিইউতে রাখা হয়েছে।’

এর আগে ‌বৃহস্পতিবার ( ২ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে সদর উপজেলার শহরের উপকন্ঠ মুক্তারপুর এলাকায় একটি ফ্লাটে তিতাস গ্যাসের বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজান অগ্নিদগ্ধ হয়।

এটি একই পরিবারে মো.কাউসার খান(৪২), কাউসারের স্ত্রী শান্তা বেগম(৩৮), ছেলে ইয়াসিন খান(৫) ও মেয়ে নহর খান (৩) অগ্নিদগ্ধ হন।

কাউসার আবুল খায়ের কোম্পানি লিমিটেডের রিভার ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন। কাউসার চাকরি সুবাদে সদর উপজেলার পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকার একটি তিনতলা বাড়ির দুইতলায় স্ত্রী- ছেলে,মেয়ে নিয়ে ভাড়া থাকতেন।

স্থানীয়রা বলেন, বুধবার রাতে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। দিবাগত রাত চারটা থেকে সোয়া চারটার দিকে কাউসার খানদের বাড়িতে বিকট শব্দ শুনতে পাই। তাদের ঘরের সবাই চিৎকার করছিলেন।‌ঘর থেকে বেরিয়ে তাদের কক্ষ থেকে আগুন দেখি।দ্রুত ফায়ার সার্ভিসে খবর দেই। আশপাশের সবাই তাদের দুই তালার কক্ষে যাই। সেখানে পানি দিয়ে আগুন নেভাই।

মুন্সিগঞ্জ তিতাস গ্যাসের সহকারি কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যতটুকু দেখেছি গ্যাসের লিকেজ থেকে এ ঘটনা ঘটেনি। তবে এমন হতে পারে অসাবধানতাবশত পরিবারটি গ্যাসের চুলা ছেড়ে রেখেই ঘুমিয়ে ছিল। রাতের বেলায় যখন তারা শৌচাগার অথবা অন্য কোনো কারণে বৈদ্যুতিক সুইচ অন করে, সেখান থেকেই আগুন লাগার সূত্রপাত হতে পারে ।

মুন্সিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জৈষ্ঠ্য স্টেশন কর্মকর্তা মো. আবু ইউসুফ জানান, বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৫ টার দিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। চারতলা ভবনের দুইতলা ভবনের একটি বাসায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সেখানে মশারি, বিছানার, চাদর আগুনে পুড়ে গেছে। এছাড়া বাসার দরজা, জানালা আগুনে পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। অগ্নিধগ্ধ সবাইকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ইউনিটে পাঠানো হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে যে কোনভাবে বাসার কক্ষে গ্যাস জমা হয়। পরে গ্লোব অথবা বিদ্যুতের সুইচ থেকে আগুন লাগতে পারে।

error: দুঃখিত!