শিহাব আহমেদঃ মুন্সিগঞ্জে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩ এবং মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ বিষয়ে আইনজীবীদের সাথে দিনব্যাপী কর্মশালা করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম-ওকাপ।
শনিবার (১৭ নভেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এম জুলফিকার হায়াত। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পাবলিক প্রসিকিউটর আইনজীবী আব্দুল মতিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ও নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল এর পিপি লাবলু মোল্লা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এম জুলফিকার হায়াত বলেন, বাংলাদেশে যে কয়টি জেলা থেকে মানুষ সবচেয়ে বেশি বিদেশে যায় তার মধ্যে মুন্সিগঞ্জ অন্যতম। তবে এর খারাপ দিকটি হচ্ছে এখানকার মানুষের প্রতারণার শীকার হওয়া এবং ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ফেরৎ আসার ঘটনাও প্রচুর। বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ কোর্টে ২৫০০ এরও বেশি মামলা চলমান রয়েছে বিদেশ সংক্রান্ত।
তিনি এসময় আরও বলেন, মানব পাচার প্রতিরোধে সরকারের যে বিশেষ দুটি আইন রয়েছে তা অনেক আইনজীবী জানেনও না। অথবা অনেক আইনজীবি বিষয়টাকে পাশ কাটিয়ে যেতে চান। তারা সচরাচর ৪০৬ অথবা ৪২০ ধারায় মামলা পরিচালনা করতে আগ্রহী। এতে ক্ষতিগ্রস্থরা সম্পূর্ন প্রতিকার পায় না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পাবলিক প্রসিকিউটর আইনজীবী আব্দুল মতিন বলেন, অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়া ঠেকানো আমাদের সামাজিক দায়িত্ব আর বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়াকে নিরাপদ করে তোলা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
তিনি এসময় তৃণমূল পর্যায়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩ এবং মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ আইনের বিষয়বস্তু নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, আমাদের সবাইকে অভিবাসনের বিষয়টাকে সামাজিক সমস্যা হিসেবে চিন্হিত করতে হবে। কারন আমাদের অঞ্চল থেকে প্রচুর মানুষ বৈধ বা অবৈধ উপায়ে বিদেশ যাচ্ছে। এটাই বাস্তব সত্য।
তিনি এসময় আরও বলেন, আমরা যারা নিরাপদ অভিবাসন নিয়ে স্বেচ্ছায় কাজ করি তাদের উচিৎ বিভিন্ন দেশে যে বাংলাদেশী দূতাবাসগুলো রয়েছে সেগুলোকে আরও সক্রিয় করে তুলতে চাপ সৃষ্ঠি করা।
মি.কবির বলেন, আমরা যারা সমাজের সচেতন শ্রেণীর তাদের এ বিষয়ে ভুক্তভোগী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কম। তাই গ্রামীন পর্যায়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩ এবং মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী তাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ওকাপের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রজেক্ট ম্যানেজার ওলিউল্লাহ অপু, ওকাপ মুন্সিগঞ্জের ফিল্ড অফিসার ইউজিন ম্রং, ফিল্ড অর্গানাইজার তাইজুল ইসলাম শিহাব প্রমুখ।