মুন্সিগঞ্জ, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের কৃতি সন্তান রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে মুন্সিগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রোববার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মুন্সিগঞ্জ জেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিশেষ করে লৌহজং ও টংগিবাড়ীতে যেখানে তিনি গত সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন সেখানকার নেতা-কর্মীরা তার মৃত্যুতে শোকে বিহবল হয়ে পড়েছেন।
কিছুদিন আগে মাহবুবে আলম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও সেখান থেকে সুস্থও হয়েছিলেন। তবে ধকলটা ঠিক সামলে উঠতে পারেননি।
এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, মুন্সিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জল, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ খোকা, আমার বিক্রমপুর এর প্রকাশক মাহতাব উদ্দিন কল্লোল, মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আল মাহমুদ বাবু, মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহম্মেদ পাভেল প্রমুখ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন মাহবুবে আলম।
তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর জ্বর নিয়ে ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন মাহবুবে আলম। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার হঠাৎ অবনতি ঘটলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর আইসিইউতে নেওয়া হয়।
তবে সর্বশেষ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ এসেছিল বলে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
যুদ্ধাপরাধের মামলার এক রায়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি মাহবুবে আলম।
মাহবুবে আলম ২০০৯ সালে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে নিয়োগ পান। তারপর মৃত্যু অবধি ওই পদে ছিলেন। পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন মাহবুবে আলম।
এছাড়া সংবিধানের পঞ্চম, সপ্তম, ত্রয়োদশ ও ষোড়শ সংশোধনী মামলা পরিচালনাও করেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মামলায়ও যুক্ত ছিলেন মাহবুবে আলম। আলোচিত বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি।তার এসব ভূমিকা স্মরণ করেছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।