মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলায় সূর্যসেনা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের তালতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ বলছে, সংগঠনের নামে সেখানে মাদক ব্যবসা চলছিল। তাই পুলিশের একটি দল টেবিল-চেয়ার, টেলিভিশন, আলমারি ভেঙে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশের ৩০/৪০ জনের একটি দল সূর্যসেনা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ১৫/২০ মিনিটে সংগঠনের আসবাবপত্র গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কার্যালয়ে বসে থাকা বাড়ৈপাড়া গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের (৩৫) মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এ ছাড়া আশপাশে দোকানে থাকা সাত-আটজনকে পিটিয়ে আহত করে।
সূর্যসেনা সংগঠনটির অন্যতম অর্থদাতা স্পেনের নাগরিক মামুন আহম্মেদ। সংগঠনটি উপজেলার শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের বেশির ভাগ সময় বাংলাদেশে থাকেন মামুন। মালখানগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা পুলিশ বাহিনীকেও মামুনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
শান্তা (২১) নামের এক তরুণী বলেন, ‘উনি (মামুন) ইউপি নির্বাচন করতে চান। মানুষ তাঁকে পছন্দ করে। উনি ভালো বিচার করেন। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তাঁকে পছন্দ করেন না। তাই পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে।’ পুলিশের ভাঙচুরের সময় ঘটনাস্থলেন ছিলেন এই তরুণী।
এ বিষয়ে মামুন আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের এই সংগঠন (সূর্যসেনা) একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের বই, নগদ অর্থ, অসহায় রোগীদের চিকিৎসায় আর্থিক সাহায্য, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করি।’
সিরাজদীখান উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবহার করে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি বলেন, ‘সে তো আমার ভাতিজা। খারাপ ছেলে। মদ, গাঁজা, ইয়াবার ব্যবসা করে। সে কি আমার সমকক্ষ? তার নামে মামলা হয়েছে (পুলিশ জানিয়েছে মামলার প্রস্তুতি চলছে)। ওখানে বসে অপকর্ম করত। এলাকাবাসী কী ভালো-মন্দ, বোঝে না? নির্বাচন করতে চাইলেই হলো?’ মালখানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হলেন তাঁর স্ত্রী সানজিদা আকতার জোসনা।
এ বিষয়ে সিরাজদীখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান বলেন, ‘সংগঠনের নামে সেখানে মাদক ব্যবসা চলছে। তাই মাদক ব্যবসার আস্তানা ভেঙে দিয়েছি এবং ইয়াবা ও একটি রামদা উদ্ধার করেছি। মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’
সূত্র: www.ntvbd.com