‘দুর্যোগ দুঃসময়ে অহর্নিশ মানবতার সেবায় পাশে আছে বাংলাদেশ পুলিশ’- এই শ্লোগানকে বুকে ধারন করে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার নিশিতে ছুটে যান শীতার্ত মানুষের সন্ধানে।
গত শনিবার গভীর রাতে পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলম পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: মোস্তাফিজুর রহমান, ওসি ডিবি আবুল কালাম আজাদ, সদর থানার ওসি ইউনুচ আলী, ট্রাফিক সদর এর টিআই মো: কামরুল ইসলাম বেগসহ ৩০ সদস্য পুলিশের একটি টিম প্রথমে ছুটে যান শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার লঞ্চ টার্মিনালে।
টার্মিনালে গিয়ে দেখেন প্রায় ৩০ জন শীতার্ত মানুষ ফ্লোরে আলুর বস্তা গায়ে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছেন। পুলিশ সুপার নিজ হাতে শীতার্তদের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেন।
পরে গাড়ী নিয়ে ছুটে যান মুক্তাপুরের উদ্যেশ্যে। যাওয়ার সময় পথে পথে গাড়ী থামিয়ে রাস্তার পাশে ঘুমন্ত শীতার্তদের গায়েও কম্বল তুলে দেন। পরে পুলিশ সুপার গভীর নিশিতে ছুটে যান মুক্তারপুর বাস স্ট্যান্ডে।
সেখানে গিয়েও মিলে শীতার্ত মানুষের সন্ধান। বাস স্টান্ডের দোকানগুলোর বেঞ্চের মধ্যে শীতের মধ্যে কুঁকড়ি, মুকরি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে বিভিন্ন বয়সের শীতার্ত মানুষ। পুলিশ আশপাশ এলাকায় সন্ধান করে আরো শীতার্তদের খুঁজে বের করেন। পুলিশ সুপার বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বয়সের শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন। এ সময় শীতের রাতে ঘুম ভেঙ্গে হাতে কম্বল পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়ে শীতার্ত মানুষগুলো।
এসময় জেলা পুলিশের উদ্যোগে প্রায় ৫ শতাধিক শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র ও কম্বল বিতরন করা হয়।
শত বছর বয়সী বৃদ্ধ আকবর আলী বলেন, রাতে লঞ্চ টার্মিনালে শুয়ে থাকি কেউ কোন দিন খবর রাখেনি আমাদের। ঘুম ভেঙ্গেই দেখি এসপি সাহেব আমার গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিচ্ছে। মনে হলো কোন ঘুমন্ত পিতাকে রাতের আঁধারে তার ছেলে গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিল।
আরেক শীতার্ত সরাফত আলী বলেন, সমাজের বৃত্তবানরা যদি এভাবে এগিয়ে আসতো তাহলে আর কোন শীতার্ত কোন লোক শীতে কষ্ট পেতনা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কোথাও কোন কম্বল বিতরন হলে ছুটে যাই। গেলে পরিচিত মুখ না হলে কম্বল জোটেনা। আবার কম্বল আনার জন্য গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করতে হয়। সেখানে কম্বল বিতরণের নামে মঞ্চ বানিয়ে দেওয়া হয় রাজনৈতিক ভাষন।