মুন্সিগঞ্জ, ৭ জুলাই ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার পাঁচগাও গ্রামে স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচনে জয়-পরাজয়কে কেন্দ্র করে পাচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন হালদারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
জানা গেছে, পাঁচগাও ওয়াহেদ আলী দেওয়ান উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন ছিলো আজ রোববার। সেখানে মোট ভোট ছিলো ১১ টি। ফলাফলে দেখা যায়, সভাপতি পদে ইউপি চেয়ারম্যান সুমন সমর্থক দেওয়ান মনিরুজ্জামান পেয়েছেন ৯ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিলেনুর রহমান মিলন পেয়েছেন মাত্র ২ ভোট। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান সুমনকে গুলি করে হত্যা করেন মিলনের চাচাতো ভাই নুর মোহাম্মদ হাওলাদার।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় সোহেল মোল্লা বলেন, ‘নূর মোহাম্মদ ও ভোলাসহ মোট ৯ জন সন্ত্রাসী ৪টি মোটরসাইকেল নিয়ে ওয়াহেদ আলী দেওয়ান উচ্চ বিদ্যালযয়ে প্রবেশ করে। সুমন হাওলাদার বেলা ১১ টার দিকে পাঁচগাও ওয়াহেদ আলী দেওয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসে ছিলেন। এ সময় নূর মোহাম্মদ ও ভোলা দুজনে দুইটি পিস্তল নিয়ে এসে সুমন হালদার এর কাছে জানতে চায় নুর মোহাম্মদ ও ভোলার সমর্থক মিলেনুর কেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে। এসময় সুমন হাওলাদার বলেন, ‘কেন ফেল করলো আমি কি করে বলবো।’ এ কথা বলার সাথে সাথে ভোলা চেয়ারম্যান সুমন হাওলাদারের বুকে লাথি মারলে সুমন চেয়ার থেকে পড়ে যায়। সাথে সাথে বুকের মধ্যে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে নূর মোহাম্মদ। এসময় সুমন দৌড়ে পালিয়ে গেলেও পিছনে পিছনে গুলি ছুড়তে থাকে ভোলা ও নূর মোহাম্মদ।
তিনি আরও বলেন, ‘আহত সুমন হালদার দৌড়ে গিয়ে পাশের এক বাড়ির দুই ঘরের মধ্য স্থানে পড়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন স্থানীয় লোকজন। এরপর আমি সুমনকে উদ্ধার করে স্থানীয় মনিরুজ্জামানের গাড়ি দিয়ে দুপুর পৌনে ২ টার দিকে টংগিবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই ভোলা হালদার গুলি করে দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের সহযোগী ম্যানেজিং কমিটির পরাজিত সভাপতি প্রার্থী মিলেনুর রহমান হালদার, সওদাগর হালদার, কাউসার হালদার, নূর হোসেন হালদারসহ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।
টংগিবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার প্রণয় মান্না দাস বলেন, ‘দুপুর পৌনে ২ টার দিকে গুলিবিদ্ধ চেয়ারম্যানকে হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকের নিচে ডান পাশে একটি গুলির চিহ্ন পাই।’
নিহতের ছোট ভাই ইমন হালদার বলেন, ‘আমার মেঝ ভাই ইতালিতে অবস্থান করছে। সে আগামীকাল (সোমবার) দেশে পৌছালে বাদ জোহর জানাজা শেষে আমার ভাইকে দাফন করা হবে।’
টংগিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা শোয়েব আলী বলেন, ‘নিহত ইউপি চেয়ারম্যান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে।’