মুন্সিগঞ্জ, ৩০ জুলাই, ২০২২, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমে সিটি ট্রেডিং সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎয়ের অভিযোগ উঠেছে সদ্য বিলুপ্ত মিরকাদিম পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম ফেরদৌস এর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ-মীমাংসা হলে সেখানে টাকা আত্মসাৎয়ের কথা স্বীকার করলেও এখন উল্টো ঐ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে টাকা আদায়ে জোরজবরদস্তির অভিযোগ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতা।
জানা যায়, সিটি ট্রেডিং সেন্টার এর মালিক মিরকাদিমের উত্তর রামগোপালপুর এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মো. জসিমউদ্দিন। এলাকার ছেলে হিসেবে চাকরি দেন মিরকাদিমের এনায়েতনগর কুটিপাড়া এলাকার প্রবাসী লিটন মিয়ার ছেলে এস এম ফেরদৌস কে। চাকুরির সুবাদে প্রায়ই দোহারের ওয়ান ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের জয়পারা শাখা ও মেঘুলা শাখায় টাকা জমা রাখতে পাঠানো হত ফেরদৌসকে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান মালিকের সরলতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানের নগদ কয়েক লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে ওয়ান ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের ভুয়া সিল বানিয়ে আত্মসাৎ করেন ফেরদৌস, তার সহকর্মী কাগজীপাড়া এলাকার দেলোয়ারের ছেলে আকাশ (২৪) ও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার।
পরে এ নিয়ে সালিশ-মীমাংসা হলে ফেরদৌস প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষকে আড়াই লাখ টাকা ফেরৎ দেয়। বাকি টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে এখন পুরো ঘটনাটিকেই অস্বীকার করছে ফেরদৌস।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরকাদিম পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম ফেরদৌস বলেন, ‘এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। তারা জোরজবরদস্তি করে আমার কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরকাদিম পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ সভাপতি মিজানুর রহমান মিজু জানান, ‘এ নিয়ে একটি সালিশ-মীমাংসা হয়। আমিও সেখানে ছিলাম। ঘটনার সাথে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ম্যানেজার সহ স্থানীয় আরও একজন কর্মচারী আকাশ জড়িত। ম্যানেজারই তাদের পরামর্শ দিতো কালেকশন এর টাকা ব্যাংকে জমা দিবা না, আমার কাছে দিবা। আমার কাছে সিল আছে, আমি ঐ সিল মেরে তোমাদের দিয়ে দিবো।’
তিনি আরও জানান, ‘ঘটনাটি জানাজানি হলে ম্যানেজার পালিয়ে যায়। এই ….(প্রকাশের অযোগ্য) ছিলো দেশে ওরা খাইছে ধরা। এরপর কাউন্সিলর আওলাদ (২নং ওয়ার্ড) জনি (মিরকাদিম পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক) সবাই গিয়ে সমস্যা সমাধান করে দিছি।’
মিজানুর রহমান মিজু আরও বলেন, ফেরদৌস আমার কাছে টাকা আত্মসাৎয়ের কথা স্বীকার করেছে।
সালিশে অংশ নেয়া মিরকাদিম পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠানটির মালিকের দাবি ম্যানেজার, ফেরদৌস ও মিরকাদিমের আরেকটি ছেলে মিলে ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তবে সালিশে ফেরদৌস ও আরেকজন ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সকলের সামনেই স্বীকার করেছে। বাকি টাকা ম্যানেজার নিয়েছে বলে তাদের দাবি ছিলো। ঐদিনই সালিশে দেড় লাখ টাকা ফেরদৌস দিয়ে দিয়েছে। পরে দিয়েছে আরও এক লাখ। এখন যদি ঘটনা অস্বীকার করে সেটা মিথ্যা দাবি ফেরদৌসের।
সালিশে আরও উপস্থিত ছিলেন, অভিযুক্ত কাগজীপাড়া এলাকার আকাশ (২৪) এর পিতা, পিএইচপি ডিলারের অধীনে কর্মরত দেলোয়ার ও তার মামা বসুন্ধরা ডিলারের অধীনে কর্মরত আরিফ। আরিফ ও দেলোয়ার সম্পর্কে শালা-দুলাভাই।