মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বেসামাল বক্তব্য দেয়া বিতর্কিত জগলুল হালদার ভুতুর বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছে উত্তেজিত জনতা।
একইসাথে ভুতুর দেওয়া নারীনেতৃত্ব ও সম্প্রদায়িক বক্তব্যের প্রতিবাদ ও তাকে দল থেকে বহিস্কারের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে টংগিবাড়ী উপজেলা আ’লীগের নেতাকর্মীরা।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে টঙ্গীবাড়ী বাজারের সামনে থেকে ঝাড়ু– মিছিল বের হয়। মিছিলটি টংগিবাড়ী থানা হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
ভুতু হালদারের বিতর্কিত সেই বক্তব্যের ভিডিওঃ
অপরদিকে বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলার আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মানিক মিয়া বাচ্চু মাঝির সভাপতিত্বে দল থেকে ভূতু হালদারের বহিস্কারের দাবী জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল ওয়াহিদ, আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আল আসাদ বারেক, ভাইস চেয়ারম্যান রাহাত খান রুবেল,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এমিলি পারভিন, কামারখাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হাওলাদার,আউটশাহী ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল হক লিটন ঢালী, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আতিকুর ইসলাম শিল্পি, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নবীন কুমার রায়, জেলা পরিষদ সদস্য আকলিমা আক্তার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, পাচঁগাও ইউপি চেয়ারম্যান মিলেনুর রহমান মিলন, আব্দুল্লাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম, উপজেলা আ’লীগ কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ খান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন নয়ন, উপজেলা আ’লীগ সদস্য বিপু পাঠান, বালিগাও ইউপি আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল আশরাফ প্রমুখ।
ভুতু হালদারের স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকাঃ জেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বানিয়াইল ভুকেলাশ গ্রামে হানাদারদের সহায়তায় তিন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে ভুতু হালদার ও তার সহযোগীরা। তারা হলেন অজু মোল্লা, মহি দেওয়ান ও রুস্তম শিকদার। এ ঘটনার জের ধরে পরবর্তী সময়ে ভুতু হালদারের পিতামহ অর্থাৎ দাদা স্থানীয় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আরফ আলী হালদার মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হন। ওই সময় ভুতু পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান এবং মুক্তিযুদ্ধের পর ভুতু বেশ কয়েক বছর পলাতক ছিলেন।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার কাদের মোল্লাও অভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভুতু হালদার, তার বাবা মনতাজউদ্দীন হালদার এবং দাদা আরফ আলী হালদার তারা সবাই রাজাকার ছিলেন। আমি নিজে টংগিবাড়ী এলাকায় যুদ্ধ করেছি। ওই সময় আমরা রাজাকারির কারণে ভুতুদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিই এবং তার দাদাকে পিটিয়ে মেরে ফেলি। ভাগ্যক্রমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় ভুতু। স্বাধীনতার পর, বঙ্গবন্ধু যখন সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন, তখন এ সুযোগ নিয়ে সে এলাকায় ফিরে আসে।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ অজু মোল্লার নাতি আশরাফ বলেন, আমি বাবা-চাচাদের মুখ থেকে যতটুকু শুনেছি, ভুতু হালদার ও তার পরিবারের লোকজন পাকিস্তানিদের সহায়তায় আমার দাদাসহ তিনজনকে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা করে। শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে আমি ও আমরা এ ধরনের মানুষকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রত্যাশা করি না।