রাজধানীর বাড্ডায় দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন দুজন, এর মধ্যে একজন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা।
বৃহস্পতিবার রাতে আদর্শনগর পানির পাম্পের কাছে আড্ডারত অবস্থায় সরকার সমর্থক কয়েকজনের উপর গুলিবর্ষণ হয় বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম দুজনের মৃত্যুর খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন।
নিহতদের মধ্যে শামসু মোল্লা (৫৩) ঢাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগ যুগ্ম সম্পাদক।
নিহত অন্যজনের নাম ফিরোজ আহমেদ মানিক (৪৫)। তিনি উত্তর বাড্ডার এইচ এ এফ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। ঘটনাস্থলের কাছেই তার বাসা।
আহতদের মধ্যে পিঠে গুলিবিদ্ধ আব্দুস সালামকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি যুবলীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা।
মাহবুবুর রহমান গামা নামে অন্যজন গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক। সোনার বাংলা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নামে তার একটি এনজিও রয়েছে।
কী কারণে এই হামলা হয়েছে এবং কারা এই হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান ঘটনাস্থল ও ইউনাইটেড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে বলেন, নিহতদের শরীরে গুলির একাধিক চিহ্ন রয়েছে। কী কারণে তাদের উপর হামলা হয়েছে, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
রাজনৈতিক, এলাকার আধিপত্য, ব্যক্তিগত, ব্যবসা- সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি র্যাব এবং গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি দেখছে।
ইউনাইটেড হাসপাতালে শামসু মোল্লা ও মানিকের লাশ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে কমার্স কলেজের কাছে ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয়ের শ’ খানেক গজের মধ্যে ওই পানির পাম্প ঘরের সামনে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিয়মিত আড্ডা দেন। এর মধ্যেই রাত ৯টার দিকে হামলা হয়।
ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসবক লীগের সহসভাপতি মারুফ আহমেদ মানিক বলেন, তারা ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছিলেন, ওই সময় অতর্কিত হামলা হয়।
“আমি আলোচনা থেকে উঠে বাথরুমে গিয়েছিলাম, এর মধ্যেই শুনি গুলির শব্দ, এসে দেখি চারজন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন।”
তিনজনকে ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে শামসু মোল্লা ও মানিকের মৃত্যু হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকা মহানগর (উত্তর) ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক আরিফুর রহমান এবং গামার সহযোগী তাহসীর রহমান সৈকত সাংবাদিকদের বলেন, তিন থেকে চারজন হেঁটে এসে গুলি চালায়।
“আহসানিয়া হাসপাতালের দিক থেকে এসে গুলি চালিয়ে তারা হোসেন মার্কেটের দিক দিয়ে হেঁটে চলে যায়,” বলেন সৈকত। তার দাবি, হামলাকারীদের দুজনের হাতে অস্ত্র ছিল।
সৈকত বলেন, “হামলাকারীদের টার্গেট ছিল গামা। প্রথম গুলিটি গামাকে লক্ষ্য করেই করা হয়। এরপর তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।”