ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পৌরসভাগুলো আলাদা তালিকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভার তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
ইসির সভায় জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, “২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রায় দুই শতাধিক পৌরসভার নির্বাচন করতে হবে। সে হিসাবে ডিসেম্বরের শেষ দিকে এসব পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।”
মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ থেকে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।
সর্বশেষ ২০১১ সালে জানুয়ারি মাসে পাঁচ দিনে আড়াই শতাধিক পৌরসভায় ভোট হয়। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন অনুযায়ী প্রথম সভা থেকে পরবর্তী ৫ বছর মেয়াদ রয়েছে পৌরসভার।
এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যথাসময়ে উপযোগী পৌরসভায় নির্বাচনের ব্যবস্থা নেব আমরা। মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। সব কিছু পর্যালোচনা করে বিবেচনার জন্যে কমিশন উপস্থাপন করা হবে।”
তিনি জানান, ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব পৌরসভার ভোট করতে হবে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই ও আনুষাঙ্গিক বিষয়ে ইসি সচিবালয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে। একদিনে ভোট হবে নাকি একাধিক দিনে হবে- তফসিল ঘোষণার বিষয়ে চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত ইসি।
গত ১৭ জুন পৌরসভার তালিকা চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব মো. খলিলুর রহমান কমিশন সচিবের কাছে তালিকা পাঠান।
ইসি সচিব জানান, সর্বশেষ নির্বাচনের তারিখ, প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ দিয়ে দেশের ৩২৩টি পৌরসভার তালিকা দিয়েছে সরকার।
মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব জানান, এবার নির্বাচন উপযোগী আড়াইশ’ পৌরসভার মধ্যে রয়েছে-২০১১ সালে ভোট হয়েছে এমন ২৪০টি এবং সীমানা এবং আইনি জটিলতা নিষ্পত্তি হওয়া আরও ১৩টি।
তবে সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম চলমান ও মামলা অনিষ্পন্ন থাকায় এবার ৩০টি পৌরসভা নির্বাচন অনুপযোগী বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
তিন শতাধিক পৌরসভার মধ্যে বাকিগুলোয় বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন হয়েছে।
দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ চলায় নতুন ভোটার তালিকা দিয়ে সম্ভব হবে না এবার পৌরসভার নির্বাচন। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই করতে হবে ভোট।
হালনাগাদ নিয়ে ইসির সভায় নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক জানান, ডিসেম্বরের শেষ দিকে উপযুক্ত পৌরসভাগুলোর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।জানুয়ারিতে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হলে সে তালিকা দিয়ে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত তালিকা হলেও নতুন ভোটাররা পৌরসভায়ও ভোট দিতে পারবে না।
তফসিল ঘোষণার পর ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি, কর্তন, স্থানান্তর কার্যক্রমও আইন অনুযায়ী বন্ধ থাকে।
“ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ মার্চ থেকে জুলাই মাসে পূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসের দিকে ইউপিগুলোর তফসিলও ঘোষণা করতে হবে,” বলে মত দেন এ নির্বাচন কমিশনার।
নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী সভায় জানান, ডিসেম্বরে এসব উপজেলাগুলোর নির্বাচন করা যায় সেক্ষেত্রে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে। তবে এক্ষেত্রে কিছুটা রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা একসঙ্গে হালনাগাদ ও নির্বাচন একসঙ্গে করতে পারবে কিনা তাও ভাবতে হবে।
ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ বিদ্যমান ভোটার তালিকা দিয়েই নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে যে এলাকায় নির্বাচন হবে সে এলাকায় হালনাগাদ কাজ পিছিয়ে দেওয়া হবে।”