মুন্সিগঞ্জ, ২৬ নভেম্বর, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
পদ্মা সেতুর নতুন আরও একটি স্প্যান কাল বসতে পারে।
পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে বসতে বাকি আর মাত্র তিনটি স্প্যান। বাকি থাকা ৩টি স্প্যানের মধ্যে আগামীকাল শুক্রবার (২৭ই নভেম্বর) সেতুতে বসানো হতে পারে ৩৯তম স্প্যান “টু-ডি।
সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া অংশে ১০ও ১১ পিয়ারে বসানো হবে এটি। এতে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে সেতুর ৫হাজার ৮৫০মিটার অংশ। ৩৮তম স্প্যান বসানোর ৬ দিনের মাথায় ৩৯তম স্প্যানটি বসতে যাচ্ছে।
আর চলতি নভেম্বর মাসে এ নিয়ে সেতুতে মোট ৪টি স্প্যান বসানোর কাজ সম্ভব হবে ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার সকালে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূলসেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের জানিয়েছেন আবহাওয়া অনুকূলে ও কারিগরি জটিলতা না থাকলে স্প্যানটি বসানো হবে।
তিনি জানান, স্প্যানটি পিয়ারে বাসানোর জন্য প্রস্তুত। ক্রেণে তোলা ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম চলছে।
শুক্রবার সকাল ৮অথবা ৯টার দিকে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেণ তিয়াইন-ই ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৭তম স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিয়ারে উদ্যেশ্যে রওনা হবে। কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে নির্ধারিত পিয়ার দুটির দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। ভাসমান ক্রেণ এ দূরত্ব পারি দেওয়ার পর পরবর্তী প্রক্রিয়ায় কারিগরি সমস্যা না দেখা দিলে আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এদিনই স্প্যানটি বসিয়ে দেওয়া হবে।
তবে বৈরি আবহাওয়া কিংবা জটিলতা তৈরি হলে স্প্যানটি বসতে আরেকটু সময় লাগবে।
প্রকৌশলী সূত্রে আরো জানা যায়, ৩৯তম স্প্যানটি বসে গেলে বাকি থাকবে ২টি স্প্যান বাসানোর কাজ।
ডিসেম্বর মাসে ১১ ও ১২ নং পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে স্প্যান বাসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এগিয়ে চলছে। এরমধ্যে সেতুতে ১হাজার ৮৪৮টি রেলওয়ে ও ১হাজার ২৩৮টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩৮টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৫হাজার ৭০০ মিটার অংশ।
৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়া হবে।