মুন্সিগঞ্জ, ২৭ জানুয়ারি, ২০২০, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় জ্বর থেকে পরবর্তীতে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে আব্দুর রহমান (৩) ও শামীমা আক্তার (৩২) নামের একই পরিবারের চাচী ও ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মৃত্যুর আগে উভয়ের শরীরে ছোপ ছোপ রক্তজমাট বাধা দাগ দেখা গেছে বলে পরিবার দাবি করেছে।
এদিকে এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবরে দিনভর পুরো মুন্সিগঞ্জে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
নিহতরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি বলে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কামরুল হাসান পাটোয়ারী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দিবাগত রাত ২টায় উপজেলার যশলদিয়া এলাকার মীর সোহেলের শিশু পুত্র আব্দুর রহমান মারা যায়। এর আগে একইদিন সকাল রাত ৮টায় মীর জুয়েলের স্ত্রী শামীমা আক্তার মারা যায়। নিহত ২জন সম্পর্কে চাচী-ভাতিজা।
নিহত শামীমার স্বামী মীর জুয়েল জানান, রবিবার সকালে হঠাৎ শামীমার শরীরে ব্যাথা অনুভব হলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎকসকে জানান তিনি। পল্লী চিকিৎসক এসে জ্বর হয়েছে বলে নিশ্চিত করে ঔষধ দিয়ে যায়। এরপরই তার হাত পায়ের আঙুল বাকা হতে শুরু করে ও দাত লেগে যায়। একপর্যায় সকাল ৮টায় মারা যায় শামীমা।
একইদিন রাতে ভাতিজা আব্দুর রহমানেরও একইভাবে মৃত্যু হয়।
এ ব্যপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কামরুল হাসান পাটোয়ারী জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহত রহমানের ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। নিহতের লক্ষণ দেখে করোনা ভাইরাস কি না সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিশেষ টিমের পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে।
এলাকাটিতে পদ্মা সেতু ও যশলদিয়া পানি শোধনাগারে নির্মান কাজ চলমান থাকায় চীন সহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের উপস্থিতি রয়েছে।
ঐ বাড়ির পাশে যশলদিয়া পানি শোধনাগারে কিছু চীনা লোক কাজ করে। এছাড়াও পদ্মা সেতু প্রকল্পেও চীনারা কাজ করছে। সেখান থেকে করোনাভাইরাস এই এলাকায় ছড়াতে পারে মনে করেই অনেকেই আতংকিত।
মুন্সিগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘ডাক্তারদের একটি টিম নিহতদের বাড়িতে গিয়েছে। তবে, আমাদের যা মনে হয় তাতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার কথা নয়।’
কারণ, ‘চৌদ্দ দিনের মধ্যে যদি তাদের কেউ চীন থেকে আসতো তাহলে আমরা সে রকম কিছু মনে করতাম। আসলে, লৌহজং এ কিছু প্রকল্পে চীনারা কাজ করে। সেখান থেকে করোনাভাইরাস এই এলাকায় ছড়াতে পারে মনে করেই অনেকেই আতংকিত।’
লৌহজং উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “সকালে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। শিশু ছেলের মরদেহ সকালে দাফন করা হয়। গতকাল ঐ শিশুর চাচী মারা গিয়েছিল। তবে, স্থানীয়দের কেউ কেউ আতংকিত এটা ভেবে যে, চীনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তারা মারা যেতে পারে। কিন্তু, স্থানীয় ডাক্তাররা আমাকে জানিয়েছেন মরদেহে যে সকল লক্ষণ দেখতে পেয়েছে তাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার সম্ভাবনা নেই। আসলে ঐ বাড়ির পাশে যশলদিয়া পানি শোধনাগারে কিছু চীনা লোক কাজ করে। এছাড়াও পদ্মা সেতু প্রকল্পেও চীনারা কাজ করছে। সে কারণে এমন আতংক ছড়াতে পারে।”