শিক্ষাবিদ, কবি, লেখক, সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৮২তম জন্মদিন আজ রোববার (২৫ জুলাই)।
১৯৩৯ সালের ২৫ জুলাই কলকাতায় জন্ম নেয়া এই গুণী জীবনজুড়ে কাজ করে চলেছেন শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে মানুষ গড়ার পেছনে।
বাংলাদেশে অ-প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বিস্তারে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ২০০৫ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে। প্রবন্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭০-এর দশকে তিনি টিভি উপস্থাপক হিসাবে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২০০৪ সালে তিনি রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভ করেন।
আলোকের ঝরনা ধারায় মানুষের ভেতরের অসীম সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তরুণদের বড় করে তুলে সংঘবদ্ধ জাতীয় শক্তিতে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন দেখানোর এই গুণী- অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ।
আবু সায়ীদ ১৯৬১ সালে মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে খণ্ডকালীন প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি কিছুকাল সিলেট মহিলা কলেজে শিক্ষকতা করেন। ১৯৬২ সালের পহেলা এপ্রিল তিনি রাজশাহী কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে সরকারি চাকুরিজীবন শুরু করেন। সেখানে পাঁচ মাস শিক্ষকতা করার পর তিনি ঢাকায় ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজে যোগ দেন (বর্তমানে সরকারী বিজ্ঞান কলেজ)। এই কলেজে তিনি দু’ বছর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র তেইশ। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে বাংলা পড়াতেন।
এরপর তিনি ঢাকা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ জালালউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে সেখানে যোগদান করেন। আবু সায়ীদ যখন ঢাকা কলেজে যোগ দেন তখন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও গদ্য লেখক শওকত ওসমান৷
ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দোলন হয়, তিনি ছিলেন তাঁর নেতৃত্বে। সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর সম্পাদনার মাধ্যমে সেকালের নবীন সাহিত্যযাত্রাকে তিনি নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সংহত ও বেগবান করে রেখেছিলেন এক দশক ধরে। এ সময় কিছুকাল বাংলাদেশে টেলিভিশনে উপস্থাপনাও করেন।