নবাগত প্রযোজক-অভিনেতা শুভ চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রেমের প্রস্তাব দেয়া এবং সাইনিং মানি নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ এনেছেন চার নায়িকা। এদিকে উঠতি এই প্রযোজকের দাবি, ‘অপেশাদারিত্ব’ দেখানোয় খোদ এই নায়িকাদের সিনেমা থেকে বাদ দিয়েছেন তিনি।
চার নায়িকা পাপিয়া, আরিশা, জারা ও বৃষ্টির অভিযোগ, সিনেমাতে তাদের চরিত্র নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। প্রত্যেককেই বলা হয়েছিল, তিনি সিনেমার প্রধান নায়িকা।
চার নায়িকাই দাবি করেন, ফেইসবুকের মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে পরিচয় হয় শুভর। নিজেকে ‘গানের মানুষ’ দাবি করে ধীরে ধীরে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তারপর তাদের বলা হয়, প্রবাসী প্রেম খান একটি সিনেমা প্রযোজনা করবেন, যাতে তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি সহ-প্রযোজক হিসেবেও থাকবেন।
জারা বললেন, “আমার সঙ্গে ফেইসবুক ও ফোনেই কথা হতো শুভর। তার পরিবারের সঙ্গেও আমার ভালো যোগাযোগ ছিল। শুভ এবং তার স্ত্রী জানিয়েছিলেন সিনেমাটির ব্যাপারে, তারা আমাকে অনুরোধও করেছিলেন অভিনয় করতে। আমিও স্বপ্ন দেখতাম চলচ্চিত্রে অভিনয়ের। কিন্তু পরে যা দেখলাম, তারপর সত্যিই আর সিনেমাতে অভিনয় করতে মন চাইছে না।”
“আরশি, পাপিয়ার সঙ্গে কথা বলেও জানলাম সিনেমার সাইনিং মানি নিয়ে শুভ বেশ গড়িমসি করছেন। আমাকে বলেছিলেন, সাইনিং মানি নিয়ে টেনশন না করতে। কিন্তু আমি কেন সাইনিং মানি ছাড়া কাজ করবো?”
১৫ অগাস্ট থেকে সিনেমাটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল কক্সবাজারে। জারা জানালেন, শুটিং ইউনিটের সঙ্গে তার মাকে নেবার কথা শুভকে জানালে তাতে আপত্তি জানানো হয়।
জারা আরও বলেন, “আমি শুভকে বড় ভাইয়ার মতোই শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু তার বেশ কিছু কথাবার্তায় আমি অসংলগ্নতা পেয়েছি। শেষদিকে এসে তার অনেক কথা আমার সত্যি ভালো লাগেনি।”
সিনেমাটির অন্য অভিনেত্রী পাপিয়া হোসাইন জানালেন, সিনেমাটি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনার এক পর্যায়ে শুভ চৌধুরী তাকে ‘প্রেমের প্রস্তাব’ দিয়ে বসেন।
“আমি সত্যি অবাক হয়েছি! আমি গিয়েছিলাম, সিনেমাটি নিয়ে কথাবার্তা বলতে। সিনেমাতে আমার চরিত্র কেমন হবে, কারা থাকবেন কলাকুশলী। আমি জানতে চাইলাম আমার পারিশ্রমিকের বিষয়েও। কিন্তু শুভ এসব বিষয়ে কথা না বলে সরাসরি আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসল। আমি ডিভোর্সী জেনেও সে বললো, সে আমাকে ভালোবাসে। আমাকে সে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়ে বসে। আমার একটি ছেলে আছে। আমি কোনোভাবেই এসব মেনে নিতে পারিনি। আমি তাকে না বলে দিই।”
‘জণঅরণ্যে জোনাকি’, ‘গন্তব্য জানা নেই’ নামে দুটি টিভি নাটকের এই প্রযোজক বললেন, “সত্যি আমার আরও খোঁজ খবর নেওয়া দরকার ছিল। আমার একটি উপযুক্ত শিক্ষা হয়েছে।”
নবাগতা আরিশার অভিযোগ, “প্রযোজক, নায়ক পরিচয়ের আড়ালে শুভ মূলত একজন ধান্দাবাজ। তার কাছে আসলে সিনেমা করার মতো কোনো টাকাই নেই। শুভ কোনোভাবেই চলচ্চিত্র প্রযোজনা করতে পারবে না। সবই ধোঁকাবাজি।”
আরেক নায়িকা বৃষ্টির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “আমি শুভর সঙ্গে সিনেমাটি করছি না। আমি এ বিষয়ে আর কথা বলতে চাই না।”
নায়িকাদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রযোজক, অভিনেতা শুভ চৌধুরী বললেন, “নায়িকারা কে কি বললো, তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। তারা প্রত্যেকেই সিনেমার শুরু আগেই টাকা-টাকা করছে। তাদের আমার পেশাদার মনে হয়নি। তাই তাদের বাদ দিয়েছি।”
এদিকে শুভ চৌধুরী ‘কেন্দ্রবিন্দু’, ‘মন ছুঁয়ে যায়’ নামে দুটি সিনেমার মহরত করলেও সেসব সিনেমার শুটিংয়ের কোনো খবর নেই। তবে তার দাবী, সবগুলো সিনেমার শুটিংই তিনি ‘যথাসময়ে’ শুরু করবেন।