২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | সন্ধ্যা ৭:৪৬
মুন্সিগঞ্জের বাংলাবাজারে নদীভাঙন, পাশে নেই প্রশাসন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, নিজস্ব প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)

নদীর তীরঘেষে হেটে শম্ভুহালদারকান্দির কয়েকটি বসতি বরাবর পৌছঁতেই অনেকটা হা-হুতাশ করতে করতে ছুটে এলেন চায়না মল্লিক (৬০)। পদ্মায় ঘুর্ণিয়মান স্রোত থেকে তৈরি হওয়া অব্যাহত ভাঙন এসে ঠেকেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী চায়নার বসতভিটার পাশে। আর মাত্র কয়েক হাত, এরপর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে আর কোন চিহ্নই থাকবে না তার বসতভিটার।

গত কয়েকদিনে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। বর্তমানে নদীভাঙনে দিশাহারা এলাকার মানুষজন। অনেকটা নিরুপায় দিনযাপন করতে হচ্ছে চায়না মল্লিক, রেখা মল্লিক, মলিন রায়সহ মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের শম্ভুহালদারকান্দি এলাকার ১০-১৫টি হিন্দু পরিবারের। আর মাত্র কয়েকদিন বাকি রয়েছে দুর্গাপূজার। এই মুহুর্তে পূজার আনন্দে ভাসার কথা থাকলেও নদীভাঙনের কারনে সেই আমেজ নেই কারও মধ্যে।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিন এলাকাটিতে গেলে স্থানীয়রা জানান, গত ১ মাস ধরে নদীতে সৃষ্টি হওয়া স্রোতের কারনে এলাকাটি নতুন করে ভাঙনের মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ১০-১৫টি বসতঘর। ভাঙছে মহেশপুর ও সরদারকান্দি এলাকাতেও। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এই ব্যবস্থার আওতায় আসেননি শম্ভুহালদারকান্দির বাসিন্দারা। ফলে ভিটেমাটি ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে নদী।

নদীভাঙনের শিকার রেখা মল্লিক গতকাল সকালে বলেন, ‘দ্যাখেন কই যামু? কয়ডা ব্যাগ ফেলানোর ব্যবস্থা করে দেন, কিসের পূজার আনন্দ। ঘরটা বাঁচবো কি না সেইডাই তো কইতে পারি না। সারারাইত আমার স্বামী বাইরে হাটে। কখন ভিটা ভেঙে নদীতে পরে যায় সেই আতঙ্কে থাকি।’

স্থানীয় মলিন রায় বলেন, আমরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সদর উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু এরপরও তারা ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সব নদীতে তলিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর যদি তারা আসে তাহলে লাভ কি? কয়দিন পর দুর্গাপূজা। এখানকার মানুষের মধ্যে কোন আনন্দ নাই।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ এনামুল হক বলেন, এলাকাটিতে এই মুহুর্তে কোন প্রকল্পের জন্য ব্যবস্থা নেই। তবে, চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে দ্রুত একটা ব্যবস্থা করে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা যায়। পাশাপাশি স্থায়ীভাবে কি করা যায় সেটিও দেখা হচ্ছে।