১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
মঙ্গলবার | সকাল ৭:৪৭
‘নয়ন-পিয়াসরা নাকি কেউ দেশে নাই, তারা পার্শ্ববর্তী কোন দেশে চলে গেছে’- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, নিজস্ব প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, গজারিয়ার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে সদ্য প্রতিষ্ঠিত পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সদস্যদের ওপর হামলাকারী নৌ ডাকাত ‘নয়ন-পিয়াসরা নাকি কেউ দেশে নাই। তারা পাশ্বর্বর্তী কোন দেশে চলে গেছে। এই দেশে আসার পরে কেরানীগঞ্জ (কেন্দ্রীয় কারাগার) ছাড়া অন্য কোথাও জায়গা হবে না।’

আজ শনিবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুরে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও জানান, আমার বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। আমি এই নৌ ডাকাত গ্রুপ সম্পর্কে জানি। তাদের হাতে থানা থেকে লুট করা যেসব অস্ত্র রয়েছে, সেগুলো উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ তৎপরতা দেখাচ্ছে। অস্থায়ী ভিত্তিতে চালু হওয়া পুলিশ ক্যাম্পটি আজকে ঘুরে দেখেছি। ক্যাম্পটি স্থায়ী করার জন্য ইতিমধ্যে একটি প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির এটি স্থায়ী হয়ে যাবে।

অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। এ ছাড়া ইতিমধ্যে আমরা একটা ঘোষণা দিয়েছি, যারা লুট হওয়া অস্ত্রের সন্ধান দেবে, তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের আলুচাষিদের দুর্দশা নিয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। আলুচাষিরা যাতে ন্যায্য দাম পায়, সে জন্য আমরা আলুর মূল্য হিমাগারে ২২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম। মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও হিমাগার থেকে আলু বের হচ্ছে না। পূর্বে যে দাম ছিল, তার চেয়ে এক-দেড় টাকা কেজিতে আলুর দাম বেড়েছে। আগামী ১৫ দিন পর দাম আরও বাড়তে পারে।’

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ কাজী হুমায়ন রশীদ, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘদিন মেঘনা ও শাখা নদীতে অবৈধ বালু ব্যবসা ও নৌযানে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন নৌ ডাকাত নয়ন, পিয়াস, রিপন ও লালু বাহিনীর সদস্যরা। গত এক বছরে ডাকাতদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। ক্যাম্প চালু হওয়ার পর ২৫ আগস্ট অস্থায়ী ক্যাম্প-সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ডাকাতেরা থানা থেকে লুট করা অস্ত্র ও ককটেল বিস্ফোরণ করে পুলিশের ওপর হামলা করে।

এ ঘটনায় ২৬ আগস্ট গজারিয়া থানার উপপরিদর্শক আজহারুল ইসলাম খান বাদী হয়ে নৌ ডাকাত পিয়াসকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় পিয়াসের বড় ভাই গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের রিপন সরকার (৪১), একই গ্রামের জামিল উদ্দিন (৪০) ও গুয়াগাছিয়া গ্রামের হারুন মেম্বারকে (৪৭) গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মূল আসামি কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।