মুন্সিগঞ্জ, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, নাজমুল হাসান শাওন (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট চত্বরে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য ‘অঙ্কুরিত যুদ্ধ ১৯৭১’। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরার উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে নির্মাণ করা হয় এ ভাস্কর্যটি। তৎকালীন পৌরসভার অর্থায়নে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভাস্কর্যটির নকশা করেছিলেন চিত্রশিল্পী বিন্দু সরকার।
২০ ফুট ব্যাসার্ধের এবং রাস্তা থেকে ৩২ ফুট উঁচু এ ভাস্কর্যে একজন নারী মুক্তিযোদ্ধা, একজন সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা এবং একটি নিরস্ত্র মুষ্টিবদ্ধ হাতের প্রতীক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যা মুন্সিগঞ্জবাসীর কাছে স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে দিন যত যাচ্ছে ভাস্কর্যটি ততই হারাচ্ছে তার নান্দনিক সৌন্দর্য। রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যানার-ফেস্টুনে ঢেকে যাচ্ছে এ ভাস্কর্য। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যানারও ঝুলছে এর গায়ে। ভাস্কর্যের সামনে স্থাপিত টিনের আবরণও খুলে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাকিল তালুকদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই ভাস্কর্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। কিন্তু দিন দিন এখানে যেভাবে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হচ্ছে, তাতে একদিন মনে হবে এটি কোনো বিজ্ঞাপনের স্থান। তখন মূল উদ্দেশ্যই হারিয়ে যাবে।’
একই কথা বললেন দোকানদার মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আসলে কোনো কমনসেন্স নেই, কোথায় ব্যানার-ফেস্টুন লাগাতে হবে তা আমরা জানি না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ এ ভাস্কর্যে রাজনৈতিক ব্যানার কোনোভাবেই শোভা পায় না। নেতাদের প্রতি আহ্বান থাকবে, কিছু স্থান আছে যেখানে পোস্টার-ব্যানার মানায় না।’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করা এই ভাস্কর্যের সৌন্দর্য রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। স্থানীয় সচেতন মহলের আহ্বান, কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে ‘অঙ্কুরিত যুদ্ধ ১৯৭১’ ভাস্কর্যকে তার মূল রূপে ফিরিয়ে আনে।