মুন্সিগঞ্জ, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)
সাধারণ বেশভূষা ও চলন-বলনের কারনে মুন্সিগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় রাজনীতিক আব্দুল হাই। বলা হয়ে থাকে এযাবৎকালের জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ তিনি- যিনি সকল দলের নেতাকর্মীদের কাছে শ্রদ্ধা ও সম্মানের জায়গা বজায় রাখতে পেরেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল হাই স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তী সময় ১৯৭৩ সালে দেশের প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ছাত্র থাকাকালীন অবস্থাতেই মুন্সিগঞ্জ সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আব্দুল হাইয়ের বিএনপিতে আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। পরের বছর (১৯৭৯ সালে) দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে অবিভক্ত ঢাকা-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ, ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মুন্সিগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আব্দুল হাই।
১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়য়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অষ্টম জাতীয় সংসদে আব্দুল হাই জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পিকার নির্বাচিত হন।
সবমিলিয়ে ৫ বার এমপি ছিলেন আব্দুল হাই। যা মুন্সিগঞ্জের অন্য কোন রাজনীতিকের ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক, দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও কয়েক দফায় মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ৭৬ বছর বয়সী বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। ২০২২ সালের ৯ জুলাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাইপাস সার্জারি করতে থাইল্যান্ডে গিয়ে ব্রেইন স্ট্রোক করেন আব্দুল হাই।
বর্তমানে তিনি স্ট্রোকজনিত জটিলতায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। প্রায় ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে সকল ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শারিরীকভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন আব্দুল হাই।
২০২৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারির পর বিএনপিতে আর কোন আনুষ্ঠানিক পদে নেই তিনি। এদিন জেলা বিএনপির ৭ সদস্যের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আব্দুল হাইয়ের ছোট ভাই মহিউদ্দিন আহমেদকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। সর্বশেষ কমিটিতে আহবায়ক ছিলেন আব্দুল হাই।
আব্দুল হাই ৫ জানুয়ারি ১৯৪৯ সালে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দীতে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি থাকতে শুরু করেন মুন্সিগঞ্জ সদরের পঞ্চসার ইউনিয়নের মুক্তারপুর এলাকায়।
তার পিতা মনির উদ্দিন, ব্যবসায়ী ছিলেন। আব্দুল হাইয়ের স্ত্রীর নাম জামিলা খাতুন। এই দম্পতি দুই পুত্র সন্তান ও দুই কন্যা সন্তানের জনক। পরিবারের বড় ছেলে ইফতেখার আলম রিপন ও ছোট ছেলে ইকরামুল আলম মাসুম ব্যবসার সাথে জড়িত। মুন্সিগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যলয় থেকে তিনি মাধ্যমিক পাশ করে মুন্সিগঞ্জ সরকারি হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিএ পাস করেন।