মুন্সিগঞ্জ, ২১ মে, ২০২১, সিরাজদিখান প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে নিয়মনীতির কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে ফসলী জমিতে অবৈধ ড্রেজিং বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাসাইল ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনুর বিরুদ্ধে।
এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার অধিকাংশ ফসলী জমি। এমনকি অবৈধ ড্রেজিংয়ের ফলে হুমকির কবলে পরা কৃষি জমির মালিকরা অবৈধ ড্রেজারখানা বন্ধ না হওয়ায় আবাদকৃত জমিগুলোতে পানির যোগান দেওয়ার জন্য মটর বসিয়েও মাটির নিচে পানির লেয়ার পাচ্ছে না। এতে করে অনেকটাই বেকায়দায় পরতে হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায, উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের চরবিশ্বনাথ মৌজাস্থ চরবিশ্বনাথ উত্তর চকে বাসাইল ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্যসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মিলে প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে অবৈধ ড্রেজিং বসিয়ে মাসাধিক কালেরও অধিক সময় ধরে বালু উত্তোলন করে এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে আসছে। সরকারী নিয়মনীতির কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে নির্বিঘ্নে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ।
একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের আকারে ৩০-৪০ ফুট গভীর করে ড্রেজিং করে বালু উত্তলনের ফলে জমিটির চার পাশে অধিকাংশ ফসলি জমি ভাঙ্গন ও অব্যাহত হুমকির মুখে পড়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয়রা জানান, চরবিশ্বনাথ মৌজাস্থ চরবিশ্বনাথ উত্তর চকের চকের কৃষি জমিগুলোতে ব্লক করে বিভিন্ন বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে। ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনু জমিগুলোর মাঝখানে প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে ড্রেজার বসিয়ে ৩০-৪০ ফুটি গভীর করে বালু মাটি উত্তোলন করছে এবং তার ড্রেজিংয়ের ফলে ধীরে ধীরে জমির গভীরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ওই জমির পার্শ্ববতী জমির মাটি ভাঙ্গন ধরবে। ব্লকের ধানী জমিগুলোতে পানি দেওয়ার জন্য মটর বসিয়েও মাটির নিচে পানির লেয়ার না পাওয়ায় সেসব জমিগুলোর ফসলের ব্যপক ক্ষতি হচ্ছে।
তারা জানান, ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনু স্থানীয় ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কৃষি জমির ক্ষতি করে দাপটের সাথে ফসলী জমি থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করে চলেছে। ওই এলাকার অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়লেও দলীয় ও স্থানীয় প্রভাবের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
এ ব্যপারে বাসাইল ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম মনু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুঠোফোনে বলেন, হ্যা আমি আমার জমিতে ড্রেজার বসিয়েছি। বালু বিক্রি করছি না। এখান থেকে বালু নিয়ে স্কুলের জমি ভরাট করছি। এতে কার কাছে জিজ্ঞেস করবো?
আইন অমান্য করে ফসলী জমিতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি এবং একপর্যায়ে সংবাদটি যাতে প্রকাশ না করা হয় সে জন্য তিনি সাংবাদিককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।