১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | রাত ৮:০৫
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ: নেপালকে হারিয়ে আবার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
খবরটি শেয়ার করুন:

৩০ অক্টোবর ২০২৪, ডেস্ক রিপোর্ট 

গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে মনিকা চাকমার গোলে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখা গেল না। আমিশা কারকির লক্ষ্যভেদে সমতা টানল নেপাল। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে আরও জমে উঠল লড়াই। মরিয়া বাংলাদেশকে শেষদিকে বাঁধনহারা উল্লাসে মাতালেন ঋতুপর্ণা চাকমা। তিনি অসাধারণ কায়দায় জাল কাঁপালে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ধরে রাখল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

বুধবার কাঠমুন্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ২০২৪ আসরের জমজমাট ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়েছে পিটার বাটলারের শিষ্যরা।

সাফে বাংলাদেশের মেয়েদের এটি টানা দ্বিতীয় শিরোপা। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত গত আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচও হয়েছিল এই দুই দলের মধ্যে। ভেন্যুও ছিল একই। সেবার নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ নারী ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। গতবারের মতো এবারও অপরাজিত থেকে শিরোপা জিতল তারা।

বাংলাদেশ গোলমুখে নেয় ১২টি শট। এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল পাঁচটি। অন্যদিকে, নেপাল গোলমুখে আটটি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে পাঁচটি।

কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারির সামনে বাংলাদেশ খেলতে নামে একাদশে একটি পরিবর্তন এনে। ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলা মোসাম্মৎ সাগরিকার জায়গায় দলে ফেরেন ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়র। এই পরিবর্তন প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ, চোটের কারণে সেমিতে খেলতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র।

৪-৩-৩ ফরমেশন বেছে নেওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। গোলরক্ষক আনজিলা তুম্বাপোর বদলে গোল-কিক নেওয়ার সময় পিছলে পড়ে যান নেপালের গিতা রানা। সামনেই থাকা ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন বল পেয়ে ডি-বক্সের থেকে নেন শট। তা দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রসবারে বাধা পেয়ে ফিরে আসে। এরপর আলগা বলে তহুরার হেড জমা পড়ে আনজিলার গ্লাভসে।

দশম মিনিটে ক্রসবারের কল্যাণেই বেঁচে যায় পিটার বাটলারের শিষ্যরা। মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। সেই সুযোগে বল পেয়ে যান ফরোয়ার্ড সাবিত্রা ভান্ডারি। তার পাসে মিডফিল্ডার আমিশার দূরপাল্লার শট ক্রসবারে আটকে যায়।

২৪তম মিনিটে ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিনের প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি আনজিলাকে। পরের মিনিটে ডানদিক থেকে আসা ক্রস লুফে নিতে ব্যর্থ হন রুপনা। সেখানে থাকা সাবিত্রা শট নেওয়ার আগেই বল ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দকার।

৩৪তম মিনিটে নেপালের ডি-বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দার শট চলে যায় ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে। পরের মিনিটে নেপালের গোলরক্ষকের ভুলে সুযোগ আসে মিডফিল্ডার মনিকা চাকমার সামনে। কিন্তু ডি-বক্সের বাইরে থেকে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি তিনি। বল চলে যায় ফাঁকা গোলপোস্টের ওপর দিয়ে।

বিরতির পর দুই দলই আক্রমণের ধার বাড়ায়। দারুণ একটি গোছানো আক্রমণে ৫২তম মিনিটে অচলাবস্থা ভাঙেন মনিকা। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের থ্রু বল নেপালের ডিফেন্ডার সাবিতা রানা মাগার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে না পারলে ডি-বক্সে বল পান মনিকা। ততক্ষণে গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন গোলরক্ষক আনজিলা। চাপের মুখে মাটিতে পড়ে যাওয়ার আগে তাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে ঠেলে দেন মনিকা।

চার মিনিট পরই স্টেডিয়ামে উপস্থিত স্বাগতিক ভক্ত-সমর্থকদের আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন আমিশা। মিডফিল্ডার প্রিতি রাইয়ের পাস সাবিত্রার পায়ে লাগার পর ফাঁকায় পেয়ে যান তিনি। এরপর ডি-বক্সে ঢুকে ডান পায়ের গড়ানো শটে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনাকে পরাস্ত করেন আমিশা।

৮১তম মিনিটে মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণার স্মরণীয় গোলে ফের লিড নেয় বাংলাদেশ। ডিফেন্ডার শামসুন্নাহার সিনিয়রের থ্রো-ইনে বল পেয়ে বামপ্রান্ত থেকে হাওয়ায় ভাসানো শট নেন তিনি। ঝাঁপিয়ে তা ফেরানোর সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেন আনজিলা। কিন্তু তার হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে বল অতিক্রম করে গোললাইন। ঋতুপর্ণার অসাধারণ লক্ষ্যভেদই শেষমেশ ব্যবধানে গড়ে দেয় লড়াইয়ে। আর শেষ বাঁশি বাজতেই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় শিরোপা।

error: দুঃখিত!