মুন্সিগঞ্জ, ২ মে, ২০২০, শ্রীনগর প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেবের বিরুদ্ধে সরকারের মানবিক ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বর্তমান দেশের ক্রান্তিলগ্নে এই অনিয়ম করার ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, স্থানীয় মেম্বার আব্দুল মোতালেব সরকারি ত্রাণ বন্টনের বিষয়ে দীর্ঘদিন যাবত অনিয়ম করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান করোনা মোকাবেলাও মানুষের ক্রান্তিলগ্নে সরকারের মানবিক সহয়তার অংশ হিসেবে যে ত্রাণ আসছে সেখানেও তিনি নিজ পরিবার ও পরিচিতদের মধ্যেই বিতরণের চেষ্টা করছেন। এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, আব্দুল মোতালেব পরপর ৩ বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবে ষোলঘর এলাকার মুন্সীপাড়া, আম্বলী পাড়া, বণিক্য পাড়াসহ ৯টি হাঁটিপাড়া নিয়ে গঠিত ৩নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পদাধীকার বলে তিনি ওই ওয়ার্ডের মানবিক সহায়তা বাস্তবায় কমিটির সদস্য হয়েছেন।
জানা যায়, মানবিক সহায়তার ত্রাণ বিতরণে তিনি নিজ পরিবারের সদস্যসহ সরকারি এক কর্মচারীর তথ্য গোপন করে নামের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান পুনরায় তাকে নামের তালিকা করার জন্য তাগিদ দেন। এতে করে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও স্থগিত হয়ে আছে।
এছাড়াও আব্দুল মোতালেব মেম্বার প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণেও নিজ পরিবারে কন্যা রোকেয়া ইসলাম, পুত্র মোকলেছ, পুত্রবধু ফাতেমা ও নাতিন জামাই শরীফ হোসেনকে উপকারভোগীর কার্ড তৈরী করে দিয়েছেন।
এছাড়াও তার ওয়ার্ডে মাজেদ নামে এক ব্যক্তির তথ্য গোপন করে তাকে ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বানিয়ে তাকেও চালের কার্ড দিতে সহযোগিতা করেছেন।
উপকারভোগী পুষ্প রানী ও ঝালমুড়ি বিক্রেতা মোসলেম বলেন, সরকারি ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড থাকা সত্ত্বেও মোতালেব মেম্বার আমাদের কোনও সহযোগিতা করেননা।
স্থানীয় খাইরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় মেম্বার মোতালেবের কারসাজিতে এমনটা হচ্ছে। এবিষয়ে অনেকেই আমাদেরকে জানিয়েছেন।
মো. রিপন নামে এক ব্যক্তি জানায়, স্থানীয় মেম্বার নিজের পরিবারের মধ্যেই উপকারভোগীর একাধিক কার্ড বানিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও চলমান করোনার ক্রান্তিলগ্নে মানবিক সহায়তার ত্রাণ বিতরণেও তথ্য গোপন করে এলাকার এক সরকারি কর্মচারী ও প্রবাসী ছেলেকে দিনমজুর হিসেবে নামের তালিকায় অন্তভুক্ত করেছেন।
ষোলঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. আজিজুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনিয়মের বিষয়ে আমি জানতে পেরে তদন্ত সাপেক্ষে পুনরায় ওই মেম্বারকে নামের তালিকা প্রস্তুত করতে বলেছি।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেবের কাছে মানবিক সহায়তার ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার একটু ভুল হয়েছিলো তা সংশোধন করা হচ্ছে।
একই পরিবারে একাধিক উপকারভোগী কার্ড তৈরীর বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কি করবো এক সময় কেউ কার্ড করতে রাজি হননি। এখন করোনা পরিস্থিতিতে সবাই ত্রাণ চায়।