অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাননীয় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একসঙ্গে বেদিতে আসেন।
রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হয় রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা। তার পরপরই প্রধানমন্ত্রী পুষ্পাঞ্জলির মাধ্যমে মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় কিছুক্ষণের জন্য নীরবতা পালন করা হয় এবং একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…’ বাজানো হয়।
বেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা।
১২টা বাজার বেশ কয়েক মিনিট আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহীদ মিনারে পৌঁছালে কয়েকজন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ বিশিষ্ট জনেরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
১২টার কিছু আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রসঙ্গত, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নিজের জীবন উৎসর্গ করে ভাষা শহীদরা জাতিকে দিয়ে গেছেন এক মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার। গৌরবের আলোয় উদ্ভাসিত মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৬ বছর পূর্ণ হলো আজ বুধবার।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র, যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে দৃপ্ত পায়ে রাজপথে নেমে আসে। সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে শহীন হন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক।
তাদের এই আত্মদানের মধ্য দিয়ে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলা ভাষা। মায়ের ভাষার মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি বাঙালি রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পায় নতুন প্রেরণা। আর এই বিজয়ের পথ বেয়ে সূচিত হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন যার পরিণতি একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
তাই একুশে ফেব্রুয়ারি শোকাবহ হলেও এর গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় পৃথিবীর বুকে অনন্য। বিশ্বে একমাত্র বাঙালি জাতিই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে।
মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পালিত হচ্ছে দিনটি।