মুন্সিগঞ্জ, ৩১ মার্চ, ২০২২, সাজ্জাদ হোসেন (আমার বিক্রমপুর) :
আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে মুন্সিগঞ্জে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
জিনিসপত্রের দাম সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা যাতে না বাড়াতে পারে সেজন্য মাঠে থাকবে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম। পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও পৌরসভার পক্ষ থেকেও বাজার মনিটরিং করা হবে।
দপ্তর ও সংস্থাগুলো বলছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রীর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ালে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার প্যানের মেয়র সোহেল রানা রানু বলছেন, রোজার প্রথম দিকে অনেক ক্রেতা একসাথে বেশি জিনিস কেনে। তার ফলে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। আর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রোজা উপলক্ষ্যে সব সময় দাম বাড়াতে চায়। এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ফুড ইন্সপেক্টর বাজার মনিটরিং করে থাকেন। পাশাপাশি এবার মাঠে থাকবে কাউন্সিলররাও। ক্রেতার অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রমজানকে সামনে রেখে বাজারে মনিটরিং বৃদ্ধি করা হবে। তাছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় পৌরসভার এলইডি টিভিতে প্রদর্শন করার পরিকল্পনা চলছে। যাতে ক্রেতা প্রতিদিন পণ্যের দাম সম্পর্কে অবগত হতে পারেন।
মুন্সিগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন জানান, রমজানে যাতে দ্রব্যের মূল্য ক্রেতার হাতের নাগালে থাকে সেজন্য প্রত্যেক দোকানে সরকারি নির্দেশনা মানার জন্য অনুরোধ করেছে শহর ব্যবসায়ী সমিতি। দোকানগুলোতে যাতে মোকাম থেকে পণ্য ক্রয়ের রশিদ সংগ্রহ করে রাখে। ভোক্তারা যাতে প্রতারণার স্বীকার না হয় সেজন্য বাজারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হবে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে সহযোগিতা করা হবে।
মুন্সিরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তৈয়ব আলী মৃধা জানান, রমজানে যাতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অসাধু ব্যবসায়ীরা না বাড়াতে পারে সেজন্য নিয়মিত বাজার তদারকি করা হবে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে থাকবে ব্যবসায়ী সমিতি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মুন্সিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক আসিফ আল আজাদ জানান, রমজানে মাসে নিয়মিত বাজার তদারকি আরও জোরদারভাবে করা হবে। কেউ যাতে অযৌক্তিক মুনাফার জন্য জিনিসপত্রের দাম না বাড়ায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে যৌক্তিক মুনাফা লাভ করার জন্য। যা ভোক্তার নাগালের মধ্যে থাকে। যারা অযৌক্তিক মুনাফা ও মজুদ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দোকানে মূল্যতালিকা প্রদর্শন করে রাখতে হবে, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য রাখা যাবে না, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইফতার সামগ্রী বিক্রি করা যাবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, চাহিদার তুলনায় যাতে অতিরিক্ত দ্রব্য মজুদ না করে সেজন্য ভোক্তার প্রতি অনুরোধ থাকবে। কারণ ভোক্তা যদি চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত দ্রব্য ক্রয় করে তাহলে বাজারে সংকট তৈরি হয়। তখন দ্রব্যের দাম বেড়ে যায়। অনুরোধ থাকবে চাহিদা অনুযায়ী ক্রয় করার জন্য।
তিনি জানান, এবারও জেলার হিমাগারেও অভিযান চালানো হবে। প্রায় ১৮ লাখ জনসংখ্যার জন্য একজন জেলা কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারী আছেন। পরিবহণ নেই। তবুও সাধ্যমতো চেষ্টা করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শিলু রায় জানান, রমজানে দ্রব্য মূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার তদারকি করবেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরও মাঠে থাকবে। সরকার নির্ধারিত দাম বাস্তবায়ন করার জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করা হবে। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থাকবে জেলা প্রশাসন। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ালে অভিযুক্তদের ছাড় দেওয়া হবে না।