২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | দুপুর ১:০৪
মুন্সিগঞ্জে ১৪ বছর আগে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৭ জনের যাবজ্জীবন
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, নিজস্ব প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জ সদরে ১৪ বছর আগে ২০১১ সালে কচুরিপানার ভেতর থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৭ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছে।

একইসাথে হত্যা করে লাশ গুম করার অপরাধে অপর একটি ধারায় প্রত্যেককে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মঙলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩ টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমি উর্মি এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় প্রচারের সময় আসামি আলেয়া বেগম ওরফে আলো বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তবে, অপর ৬ আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাজা পারোয়ানার নির্দেশ দেন আদালত।

ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামি আলেয়া বেগম (৩৫) সদর উপজেলার চরবেশনাল গ্রামের মৃত ওয়ালিদ বেপারীর স্ত্রী।

অপর পলাতক আসামিরা হলেন, একই গ্রামের মৃত মোসলেম আখনের ছেলে আতু ওরফে হাতু (৪৫), টংগিবাড়ী উপজেলার পুরা গ্রামের জৈনদ্দিন ঢালীর ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (২৯), চর বেশনাল গ্রামের সবদু খন্দকারের ছেলে আলামিন খন্দকার (৩৩), জুলহাস আকনের ছেলে শহর আলী (২২), তোতা আখনের ছেলে শহিদ আখন (৩৫), খোরশেদ দেওয়ানের ছেলে চাঁন মিয়া দেওয়ান (২০)।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর সদর উপজেলার আকালমেঘ পলাশপুর গ্রামের আমজাদ বেপারীর ছেলে ওয়ালিদ বেপারী (৩৮) শশুড় বাড়ি যাওয়ার উদেশ্যে বিকাল ৫ টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। পরে তাকে খোঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি। পরে ৬ ডিসেম্বর দুপুর ২ টার দিকে এলাকার লোকজনের কাছে ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানতে পারেন- উপজেলার দক্ষিণ চর বেশনাল চকের মাঝখানে কচুরিপানার ভেতরে একটি ডোবানালার পাশে শরীরের বিভিন্ন অংশে পঁচাগলা অবস্থায় একটি লাশ পরে আছে। এই সংবাদ পেয়ে ওয়ালিদ বেপারীর মা বাবা ও বোনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ব্যাক্তির লাশ সনাক্ত করেন। পরে পুলিশ এসে মৃত ওয়ালিদের লাশ মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করেন।

এ ঘটনায় ওয়ালিদ বেপারীর মা হাফেজা খাতুন (৬৫) বাদী হয়ে ওই দিন রাতে মুন্সিগঞ্জ থানায় ছেলের হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশেষ অভিযান চালিয়ে আসামি মোহাম্মদ হোসেনকে আটক করলে আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিলে আসামীর কথামতো অপর আসামিদের পুলিশ আটক করে আদালতে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় আদালত ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে আসামীদের দোষী সাব্যস্ত করে ওই রায় ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে রাস্ট্র পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজ আদালত হত্যা মামলায় ৭ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অপর ধারায় প্রত্যেককে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে। আদালতের রায়ে আমরা রাস্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।