মুন্সিগঞ্জ, ৩০ এপ্রিল, ২০২১, বিশেষ প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর ভেঙ্গে সরকারি জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরসহ ৪ টি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় ৪ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের কাজীরবাগ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলার মালখানগর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম আমিনসহ ৪ জনকে আটক করেছে সিরাজদিখান থানা পুলিশ।
হামলায় আহত হয়েছেন হেলেনা বেগম (৩৫), রিনা বেগম (৪৫), মাসুদা বেগম (৫০) ও বিথী বেগম (২৭)।
স্থানীয়রা জানান, কাজীরবাগ গ্রামে ৬০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছে মৃত আলমগীর শেখের পরিবার। তারা সরকারি জমিতে লীজ নিয়ে বসবাস করে আসছেন। সে জমি নিয়ে পাশ্ববর্তি মৃত মোশারফ খানের পরিবারের সাথে বিরোধ চলে আসছিলো। বিরোধ কৃত জমি নিয়ে একাধিক মামলাও হয়েছে। সে মামলা গুলোতে রায় পেয়েছেন ভুক্তভোগী মৃত আলমগীর শেখের পরিবার। মামলায় হেরে বৃহস্পতিবার মোশারফ মুন্সীর ছেলে মিথুন খান ও তার মেয়ের জামাই ফয়সাল মাঝী ও ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম আমিনসহ তার দলবল নিয়ে বিরোধ কৃত জমি দখলে হামলা চলায়। মৃত আলমগীর শেখ ও তার বড় ভাই হিরন শেখের বিধবা মেয়ে হেলেনা বেগমকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরসহ ৪ টি ঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আহসানুল ইসলাম আমিন, মিথুন খান, সামু ও ফিরোজ খানকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলার শিকার মৃত আলমগীর শেখের শারীরিক প্রতিবন্ধি ছেলে রজ্জব শেখ বলেন, আমরা সরকারি জমি লীজ নিয়ে বাপ দাদার আমল থেকে বসবাস করে আসছি। বিগত ২০১৪ সাল থেকে পাশ্ববর্তি মোশারফ খানের চোখ পরে জমিটিতে, একাধিকবার দখলের চেষ্টাও করে তারা। বিগত একমাস আগে মোশারফ খান মারা গেলে তার ছেলে ও মেয়ের জামাই জমিটি দখলে নেয়ার জন্য উন্মমাদ হয়ে উঠে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার হামলা চালিয়ে বসতঘর ভাঙচুর ও আমাদের মারধর করে। আমরা থানায় ফোনে না পেয়ে, ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।
সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বোরহান উদ্দিন বলেন, বাড়ীঘর ভাঙচুর ও সরকারি জমি দখলের চেষ্টায় হামলা ও মারধরের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল থেকে ৪ জনকে আটক করেছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম জানান, এটা একটা ফৌজদারী অপরাধ। বাদী আইনের আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক মঈনুল হাসান নাহিদ জানান, আইনের উর্ধে কেউ না। পরশ ও নিখিল ভাইয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ যুবলীগ স্বচ্ছ রাজনীতি করে। বাংলাদেশ যুবলীগ একটা বৃহত পরিবার। এখানে কেউ মাদক, সন্ত্রাস, দখলসহ কোন অপকর্মে জড়িত থাকলে যুবলীগ তাকে ছাড় দিবে না। তার অপকর্মের দায় তাকে নিতে হবে, যুবলীগ নিবে না। বিষয়টি জেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত জানানো হয়েছে। কেন্দ্র থেকে কি ব্যবস্থা নিচ্ছে আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যার মধ্যে জানিয়ে দিবে।