২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সোমবার | রাত ৯:৪৬
ধ-র্ষণের প্রতিবাদে কিশোরীর আ*ত্ম*হ*নন, আদালতে স্বীকারোক্তি সৎ বাবার
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ৩০ মার্চ ২০২৩, শিহাব আহমেদ (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জে সৎ বাবার কাছে ধর্ষণের শিকার হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক কিশোরী। এই ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর বুধবার দুপুরে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মৃত কিশোরীর সৎ বাবা গ্রেপ্তারকৃত হাসান মিজি (২৭)। সে সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চৈতারচর এলাকার খলিল মিঝির ছেলে।

মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক জামাল হোসেন জানান, বুধবার দুপুর ১২ টা’র দিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতে মেয়েকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দেন হাসান মিজি।

এর আগে সোমবার রাত ৯টা’র দিকে মুন্সিগঞ্জ শহরের ইদ্রাকপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। সদর থানার ওসি মো. তারিকুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান জানান, ভুক্তভোগী কিশোরীর মাকে এ বিষয়ে মামলার কথা বললেও তিনি প্রথমে রাজি হননি। পরবর্তীতে মাকে খুঁজে পেতেও বেগ পেতে হয় পুলিশের। কিন্তু আত্মহত্যার বিষয়টি সন্দেহ হলে পুলিশ নানামুখী তদন্ত শুরু করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে বুধবার ভুক্তভোগী মৃত কিশোরীর মা বাদী হয়ে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেন।

এর আগে গেল ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখ সদর উপজেলার চরমুক্তারপুর এলাকার কাশেম হাওলাদারের ভাড়াটিয়া দোচালা বসতঘর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলে গাইবান্ধায় নিয়ে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। ঐদিনই লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরে গতকাল বুধবার বাদীর আর্জিতে সেই মামলাটি ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচণা মামলায় রুপান্তরিত হলে দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

মামলার এজাহার ও বাদীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুক্তভোগী মৃত কিশোরী গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা। তিনি তার মা ও তার দ্বিতীয় স্বামী হাসান মিজির সাথে মুন্সিগঞ্জে বসবাস করতেন। ঘটনার ১৫-২০ দিন আগে গ্রেপ্তারকৃত হাসান মিজি সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের চরমুক্তারপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে ভুক্তভোগী কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হলে ঐ কিশোরী লজ্জায় ফেব্রুয়ারি ৬ তারিখ দুপুর আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যকার সময়ে পড়নার ওড়না সিলিং ফ্যানের সাথে পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

মামলার বাদী বলেন, আমার দ্বিতীয় স্বামীর অত্যাচারে টিকতে না পেরে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে একজন নিকৃষ্ট মানুষ। তাকে আমি অনেক বুঝিয়েছি, কোন লাভ হয়নি। আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পরও সে ক্ষান্ত হয়নি। আমাকে প্রতিদিনই মারধর করতো। আমি আদালতের কাছে ওর কঠোর শাস্তি চাই।

error: দুঃখিত!