২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রবিবার | সকাল ৭:৫৬
মুন্সিগঞ্জে থানায় ঢুকে অতর্কিত তাণ্ডব, আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ
খবরটি শেয়ার করুন:

মুন্সিগঞ্জ, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, নিজস্ব প্রতিনিধি (আমার বিক্রমপুর)

মুন্সিগঞ্জে নিখোঁজ স্কুল ছাত্রের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন থেকে অতর্কিতভাবে সিরাজদিখান থানা ও সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে থানা পুলিশের দুইটি গাড়িসহ ৪টি যানবাহন।

বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলা বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রীনগরের বেলতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ও অটোচালক রোমান শেখের (১৫) সন্ধানের দাবিতে সিরাজদিখান বাজার এলাকায় ‘কোলা ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ’ এর ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করে স্বজন ও সহপাঠীরা। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত স্কুল শিক্ষার্থীদের থানার সামনে গিয়ে কর্মসূচি পালনের পরামর্শ দেন উপস্থিত থাকা মধ্যবয়সী কয়েকজন।

এরপর মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীদের দলটি থানা গেটের সামনে গিয়ে কিছুক্ষণ দাড়ায়। পরে মিছিলটি এগোতে থাকে থানা অভ্যন্তরে। একপর্যায়ে ভবনের মূল কলাপসিবল গেইটের সামনে দাড়িয়ে এক থেকে দেড়শো স্কুল শিক্ষার্থী ‘প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’ ‘প্রশাসন জবাব দে, জবাব দে,’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

তবে এসময় পুলিশের পক্ষ হতে কোন বাঁধা দেয়া হয়নি।

৪-৫ মিনিটের মাথায় আন্দোলনরতদের মধ্য থেকে ১৫-২০ জন স্কুল শিক্ষার্থী থানার ভেতরে ঢুকে অতর্কিতে ভাঙচুর শুরু করেন। তারা এসময় আয়না দিয়ে ঘেরা বিভিন্ন ছবি সম্বলিত গ্যালারি, থানার অভ্যর্থনা কক্ষ, ডিউটি অফিসারের কক্ষ ও কক্ষগুলোতে থাকা কম্পিউটার-আসবাবপত্র ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চালান।

বাইরে থাকা আরও কয়েকজন থানা ভবনের জানালার থাই গ্লাসগুলো ইট ছুড়ে ভেঙে ফেলে সেসময় দুইটি ব্যক্তিগত গাড়ির আয়নাও ভাঙ্গেন আন্দোলনকারীরা। আরেকটি দল ছুটে যান থানার পাশে থাকা সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দিকে। সেখানে পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন তারা। একইসময় পুলিশের ব্যবহৃত আরেকটি গাড়িও ভাঙচুর হয়।

আন্দোলনকারীদের মধ্যে থাকা বেশ কয়েকজন পুরুষ ও নারী বিক্ষুব্ধদের ভাঙচুর থেকে নিবৃত্ত রাখতে চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন।

একপর্যায়ে সিরাজদিখান থানার ওসি মিজানুল হক ও সহকারি পুলিশ সুপার আ ন ম ইমরান খান বিক্ষুব্ধদের মাঝে উপস্থিত হন। এসময় মাইকে নানারকম আশ্বাস দিয়ে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করেন তারা। প্রায় এক ঘন্টা পর আন্দোলনকারীরা থানা অভ্যন্তর থেকে বের হয়ে যান।

এদিকে, থানায় হামলা-ভাঙচুরের খবর পেয়ে ছুটে আসেন মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকারসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে তাদের উপস্থিতিতে থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘থানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় কারও উসকানি রয়েছে কি না সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি।’

প্রসঙ্গত; গত ২১ জানুয়ারি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের থৈরগাঁও এলাকা থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হন নিখোঁজ রোমান। পরে এ ঘটনায় ২৫ জানুয়ারি থানায় মামলা দায়ের করে পরিবার। পুলিশ ২ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করলেও রোমানের হদিস মেলেনি এখনো।নিজের খরচ মেটাতে পড়ালেখার পাশাপাশি অটোরিকশা চালাতেন রোমান।

error: দুঃখিত!