মুন্সিগঞ্জ ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, বিশেষ প্রতিবেদক (আমার বিক্রমপুর)
জাদুঘর হল ইতিহাস আর ঐতিহ্যের এক অসাধারণ সংরক্ষণাগার যেখানে প্রতিটি মানুষ হারিয়ে যেতে পারে বহু ইতিহাসের মাঝে। তেমনি এক জাদুঘর হল বিক্রমপুর জাদুঘর। বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলায় অবস্থিত জমিদার যদুনাথ বাবুর জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ২০১৪ সালে জাদুঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে বাংলাদেশ সরকার।
শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের উত্তর বালাশুর গ্রামে জমিদার রাজা শ্রীনাথ রায়ের বাড়িটি অবস্থিত। এই পরিবারের সর্বশেষ জমিদারও ছিলেন যদুনাথ রায়। জমিদার বাড়িতে আছে দু’শ বছর আগে নির্মিত মন্দিরসহ বিশাল সব পুরাতন ভবন। জমিদার যদুনাথ রায়ের এ বাড়িটির পুরান এই স্মৃতি রক্ষার্থে প্রায় সাড়ে ১৩ একর জায়গা জুড়ে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও সরকারি অর্থায়নে নির্মান করা হয়েছে বিক্রমপুর জাদুঘর। শ্রীনগরের রঘুরামপুর ও নাটেশ্বর গ্রামে অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ শুরু হয়। এসব খননে পাওয়া গেছে বহু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। সেখান থেকে প্রায় একশ’টির মতো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই জাদুঘরটি।
তিনতলা ভবনের জাদুঘরের মূল ফটকের দু’পাশে রয়েছে দু’টি বড় মাটির পাতিল। নিচতলার বাঁ পাশের গ্যালারিটি জমিদার যদুনাথ রায়ের নামে নামকরন করা হয়েছে।
এই জাদুঘরে রয়েছে বিক্রমপুরের প্রাচীন মানচিত্র, এখানকার বিভিন্ন মুলবান প্রত্নসামগ্রীর আলোকচিত্র, বৌদ্ধবিহার, হযরত বাবা আদম (রা.) শহীদ মসজিদ, ইন্দ্রাকপুর কেল্লা, অতীশ দীপঙ্করের পরিচিতিমূলক বিভিন্ন আলোকচিত্র। এছাড়া জাতীয় জাদুঘর, বরেন্দ্র জাদুঘর ও কলকাতা জাদুঘরে সংরক্ষিত কষ্টিপাথরের মূর্তিগুলোর আলোকচিত্রও এখানে রয়েছে। এখানে রয়েছে রঘুরামপুর, নাটেশ্বরসহ বিক্রমপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া পোড়ামাটির নল, মাটির পাত্র, পোড়ামাটির খেলনাসহ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভিন্ন নিদর্শন।
বিক্রমপুরের বিভিন্ন মনীষীদের পরিচিতিসহ আলোকচিত্র, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান, মঠ ও মন্দিরের আলোকচিত্রও স্থান পেয়েছে জাদুঘরটিতে। এই জাদুঘরের নিচতলার দু’টি কক্ষের নামকরণ করা হয়েছে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু গ্যালারি ও জমিদার যদুনাথ রায় গ্যালারি। দ্বিতীয় তলার গ্যালারিটি মুক্তিযোদ্ধা গ্যালারি নামে নাম করন করা হয়েছে।