নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের পাহারার মধ্যেই সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে আক্রান্ত হলেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফেস্টিভাল চলাকালে জনপ্রিয় এই লেখকের উপর হামলা হয়, যখন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা তার পিছনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে ছিলেন জাফর ইকবাল, তার উপর হামলা হয়েছে পৌনে ৬টার দিকে।
হামলা চালানোর পর যে তরুণকে ধরে পিটুনি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা, অনুষ্ঠান চলাকালে তাকে জাফর ইকবালের পেছনেই পুলিশ সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
হামলায় জাফর ইকবালের মাথায় চারটি আঘাত এবং বাঁ হাত ও পিঠে ছুরিকাঘাতের জখম পেয়েছেন চিকিৎসকরা। ২৫ থেকে ২৬টি সেলাই পড়েছে তার শরীরে।
সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জাফর ইকবালকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।
পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যেই কীভাবে এই হামলা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
ব্লগার-লেখক মাহমুদুল হক মুন্সী ফেইসবুকে লিখেছেন, “অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের সময় ৫-৬ গজ দূরে ছিল পুলিশ। পুলিশের নিজের বক্তব্যে জানা যায় তারা স্বচক্ষে ঘটনা দেখেও চুপ করে ছিল।
“জাফর ইকবাল স্যারের নিরাপত্তায় একাধিক পুলিশ বডিগার্ড হিসেবে নিয়োজিত ছিল। এই আক্রমণও তাহলে পুলিশের উপস্থিতিতে হয়েছে।
“আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, পুলিশ তাহলে কাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করছে? খুনিদের?”
জাফর ইকবাল বরাবরই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ। কয়েক বছর আগে লেখক, অধ্যাপক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর জঙ্গি হামলার সময় জাফর ইকবালও হুমকি পাচ্ছিলেন। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে তার পাহারায় পুলিশ মোতায়েন করে সরকার।
জাফর ইকবালের ব্যক্তিগত সহকারী জয়নাল আবেদীন বলেন, “স্যারের নিরাপত্তায় জালালাবাদ থানার আটজন পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। চারজন উনার সঙ্গে থাকেন, আর চারজন বাসায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে।”
বিকালে ক্যাম্পাসের এই অনুষ্ঠান চলাকালে জাফর ইকবালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য সেখানে ছিলেন। হামলাকারীকে আটকের পর মোহাম্মদ ইব্রাহীম নামে এক পুলিশ সদস্যের হাতেও ছুরিকাঘাতের জখম দেখা যায়।
পাহারার মধ্যেও এই হামলার ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের গাফিলতি রয়েছে কি না-সে প্রশ্ন করা হয়েছিল জালালাবাদ থানার ওসি শফিকুল ইসলামকে।
“ব্যস্ত আছি,” বলেই মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।