পদ্মায় নাব্য সঙ্কটের কারণে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌ পথে যে কোনো মুহূর্তে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। নাব্য সঙ্কট কাটাতে নৌ চ্যানেলের লৌহজং টার্নিংয়ে চলছে ড্রেজিং।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, সাতটি ড্রেজারের মাধ্যমে চলছে পদ্মার পলি অপসারণের কাজ।
উজান থেকে ধেয়ে আসা স্রোতের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পলি এসে জমে পদ্মায় এ নাব্যতা সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে এ নৌ পথে নাব্য সঙ্কট দেখা দেয়। তবে চলতি বছর এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত, ছয় দিন ধরে রো-রো ফেরিগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে নৌ পথে সচল থাকা ১১টি ফেরির সবগুলো যাত্রীসহ যানবাহন কম বোঝাই করছে। কেননা, লৌহজং টার্নিংয়ে নাব্য সঙ্কটের ফলে ফেরিগুলো ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর এ পথে মাত্র চারটি ফেরি চলাচল করছিল।
এদিকে, পদ্মার পানি কমতে শুরু করেছে। কাজেই নাব্য সঙ্কট অচিরেই দূর না হলে যে কোনো সময়ে নৌ পথে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) গিয়াসউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, নৌ চ্যানেলের লৌহজং টার্নিংয়ে এখন পানি বইছে মাত্র ছয় ফুটের উপর দিয়ে। স্বাভাবিকভাবে ফেরি চলাচল করতে হলে কমপক্ষে সাত ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহের দরকার।
রো-রো ফেরি শাহ আলীর মাস্টার এ বি এম ফারুক বলেন, নাব্য সঙ্কটের মুখে আমরা ফেরি চালাতে পারছি না। ফেরির তলা আটকে যাচ্ছে নদীর তলদেশে। সঠিকভাবে ড্রেজিং না করলে ফেরি চলাচল করা সম্ভব নয়।
বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল্লাহ বলেন, সঠিক সময়ে ড্রেজিং করতে পারলে এরই মধ্যে নাব্য সঙ্কট নিরসন হত। কিন্তু উজানের পানি, বন্যা ও তীব্র স্রোতে আমাদের ড্রেজারগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার ড্রেজারগুলোর দড়ি ছিঁড়ে নিয়ে গেছে। আর দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হঠাৎ করেই চ্যানেলের মুখে ডুবোচর দেখা দেয়।
সঠিকভাবে ড্রেজিং কাজ শেষ করতে পারলে আর কয়েকদিনের মধ্যেই নাব্যতা সঙ্কট দূর করা যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন প্রকৌশলী।
এদিকে, ফেরি চলাচলে অচলাবস্থার মুখে শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় প্রতিদিনই কয়েকশ যানবাহন পারাপারের অপেক্ষমাণ থাকে। এর মধ্যে পণ্যবোঝাই ট্রাকের সংখ্যাই বেশি।
ট্রাকচালকদের অভিযোগ, পারাপার হতে উৎকোচ দিতে হচ্ছে দুই হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত।