৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
শনিবার | রাত ৯:১১
Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
ধর্মের নামে সন্ত্রাস চলতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
খবরটি শেয়ার করুন:

ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় হত্যাকাণ্ড এবং তার দায় স্বীকার করে আল কায়দার নামে বিবৃতির প্রেক্ষাপটে শনিবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম, ধর্মকেও কলুষিত করে যাচ্ছে যারা, তারা ধর্মে বিশ্বাস করতে পারে না। তারা নিজেদের মুসলমান হিসেবে কীভাবে ঘোষণা দেবে?

“বাংলাদেশে এটা চলতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। কাজেই সেই স্বাধীনতার চেতনাটা আমাদের সমুন্নত রাখতে হবে।”

গত ছয় মাসে অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশের পর শুক্রবার হত্যাকাণ্ডের শিকার নিলয়ও ইন্টারনেটে ধর্মীয় গোড়ামীর বিরুদ্ধে লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন। এজন্য ধর্মীয় উগ্রবাদীরা তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দুর্ভাগ্য যে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আজকে যে সন্ত্রাসবাদী, জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড চলছে, তার ধাক্কা মাঝে-মধ্যেই এসে লাগে। আমরা কঠোর হাতে তা দূর করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।”

ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি ছিল, তার আলোকে দেশ গড়ে তোলার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

সাম্প্রতিক বিশ্বে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের ছোবলের দৃষ্টান্ত টেনে তিনি বলেন, “কিন্তু দুঃখ হয় যখন দেখি, আজকে সৌদি আরবে মসজিদে জুম্মার নামাজের দিন সুইসাইড স্কোয়াড দিয়ে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হল।

“এরা কি মুসলমান নাকি? এক মুসলমান আরেক মুসলমানকে হত্যা করে আর তারা আত্মহনের পথ বেছে নেয়, তারা কি করে মুসলমান হয়? কোন ধর্ম তারা রক্ষা করে? ”

“একদিকে নিজেরা নিজেদেরকে হত্যা করে আবার অন্যদিকে আল-কায়দার লোক আজকে স্বীকার করেছে এখানে ব্লগারদের হত্যা করেছে। তাহলে এই যে দ্বন্দ্ব, এই যে কনফ্লিক্ট, এর জবাব কোথায়?”

“মুসলমান হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়ে মসজিদের ভেতর জুম্মার নামাজ পড়ার সময় মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। আবার ধর্মের বিরুদ্ধে লিখল কেন- তার জন্য ব্লগারদের হত্যা করা হচ্ছে। তাহলে কোনটা বাস্তব, কোনটা সত্য, কোন পথে মানুষ যাবে,” প্রশ্ন করেন শেখ হাসিনা।

“এ হানাহানি, রক্তারক্তি কার জন্যে, কার স্বার্থে? কোন ধর্মের মর্যাদা রক্ষার জন্য? জানি না, এ প্রশ্নের উত্তর কখনো কেউ দিতে পারবে কি না?”

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্যে শেখ হাসিনা শিশু নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, “আজকে বাংলাদেশের যে শিশু নির্যাতন, আমি জানি না আমাদের বাঙালির ভেতরে কী ধরনের একটা অদ্ভুত মানসিকতা আছে। একটা ঘটনা ঘটলে প্রবলভাবে যখন প্রচার পায়, তখন সেই ঘটনা আরও ঘটাবার একটা প্রবণতা আমরা দেখি।”

নির্যাতন করে শিশুকে হত্যার কয়েকটি ঘটনা ঘটার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এদের শাস্তি দিয়ে মানুষকে দেখাতে হবে যে এই অপরাধ করলে কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না।”

শিশু নির্যাতনের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট পরিবারের সবার সঙ্গে ছোট ভাই ১০ বছরের শেখ রাসেলকে হারানোর কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।

“ওই হত্যার যদি বিচার হত, তাহলে একটা দৃষ্টান্তের সৃষ্টি হত। ‍বরং ১৫ অগাস্ট হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার নানা রকম….কত লেখনী। খুনিদেরকে বাহবা দেওয়া হয়েছিল, তাদের কত বিশেষণ দিয়ে সন্মানীত করা হয়েছিল। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশে বিচার থেকে মুক্তি দিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরির মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।”

“একটা অপরাধ আরো অপরাধকে উৎসাহিত করে,” মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নানা ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন মেয়ে শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবনের উপর আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, লেখিকা সেলিনা হোসেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

এই বিভাগের সর্বশেষ
ফেইসবুকে আমরা
ইউটিউবে আমরা
error: দুঃখিত!