বাংলাদেশের সিলেটে একটি ১৩ বছরের কিশোরকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের পর তার মৃত্যুর ঘটনার ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ বলছে, তারা ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেছে এবং নির্যাতনকারীদের ধরার জন্য অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
নির্যাতনের এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
নিপীড়ন ও হত্যার ধারণকৃত চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবার এমন নিষ্ঠুরতার পেছনে সামাজিক কারণ কি?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান বলছিলেন, “কলোনিয়াল লিগেসির প্রভাব ও মানুষের ভেতর ক্ষমতা দেখানোর মনোবৃত্তি থেকে এমন আচরণ প্রকাশ পায়”।
মিঃ রহমান বলেন, “এটা সামাজিকভাবে দীর্ঘদিন ধরেই আছে পোস্ট কলোনিয়াল সোসাইটিতে আগ্রাসী বা ধ্বংস করার মনোবৃত্তি থেকে মানুষের মধ্যে এ আচরণ দেখা যায়”।
“জনগণের ভেতর যে হতাশা বা উন্মাদনা থাকে তার প্রভাবে এই আগ্রাসী আচরণ বেরিয়ে আসে”।
“শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এমনটা ঘটে। কিন্তু যে রাষ্ট্রে এসব আচরণ নিরুৎসাহিত করার কোন প্রবণতা বা সিস্টেম থাকেনা সেখানে এসব আচরণ বেশি প্রকাশ পায়”-বলছিলেন অধ্যাপক জিয়াউর রহমান।
বাংলাদেশের ঘটনাগুলো প্রসঙ্গে মিঃ রহমান বলেন, “বাংলাদেশ এখন গ্লোবালাইজেশনের একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ড পার করছে। সুতরাং এখানকার অনেক মানুষ এইসব আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
ফেইসবুক বা সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারও ঠিকভাবে করতে জানেনা বাংলাদেশের অনেক মানুষ।। অনেকের আচরণে বৈপরীত্য দেখা যাচ্ছে। তাই এমন একটি নিষ্ঠুর চিত্রও ফেইসবুকে তুলে দিতে অনেকের বাধেনা”।
“তবে ফেইসবুকে যেমন এসব ভিডিও প্রকাশ পাচ্ছে তেমনি কিন্তু এর বিরুদ্ধে প্রচারণা চলছে, সমালোচনা চলছে”-বলেন মিঃ রহমান ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব আগ্রাসী আচরণের বিরুদ্ধে একটা আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে পারলে সামাজিক পরিবর্তনে সাহায্য করবে বলে মনে করেন জিয়াউর রহমান।